হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে চবি অ্যালমনাই ইউএসএ’র দুই দিনব্যাপী কনভেনশন 

1 month ago 7

যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে চিটাগং ইউনিভার্সিটি অ্যালমনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র দুই দিনব্যাপী কনভেনশন বোস্টন ২০২৪-২০২৫। প্রথম দিনে বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ‘সাসটেইনেবল কোয়ালিটি এডুকেশন : বিল্ডিং এন্ড ইকুইটেবল ফিউচার ফর অল’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ও আমেরিকার শিক্ষা ব্যবস্থার গুনগত উন্নয়ন বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন। কনভেনশনের দ্বিতীয় দিন ক্যাম্পাসের সোনালি দিনের স্মৃতিচারণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন ১২টি স্টেট থেকে অংশ নেওয়া চবিয়ানরা। হোস্ট স্টেট ম্যাসাচুচেটস এবারের কনভেনশনের আয়োজন করে। 

পহেলা আগস্ট হার্ভার্ড ফ্যাকাল্টি ক্লাবের লোয়েব হাউজে আয়োজিত সেমিনারে যোগ দেন আমন্ত্রিত বাংলাদেশি স্কলাররা। কনভেনশন কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি মো. সাইফুর রহমান চৌধুরী টিপুর সঞ্চালনায় চিটাগং ইউনিভার্সিটি অ্যালমনাই এসোসিয়েশন, ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী ও কনভেনশন কনভেনর মো. জানে আলম সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রফেসর ড. খন্দকার করিমের মডারেশনে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমেরিকার টাফটস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শফিকুল ইসলাম। 

আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু তাহের, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড. সুলতান চৌধুরী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এসএম নসরুল কাদির প্রমুখ। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার বিপরীতে একটি গ্রহণযোগ্য সার্বজনীন কর্মমুখী বৈশ্বিক শিক্ষাপদ্ধতি প্রচলনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকরা। ভবিষ্যৎে বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে আরও সেমিনার আয়োজনের গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীরা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।

দ্বিতীয় দিন বণার্ঢ্য আয়োজনে বিভিন্ন স্টেট থেকে আসা অ্যালমনাইদের সঙ্গে নিয়ে কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন কনভেনশনের চেয়ারম্যান রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী। বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে হোটেল রয়্যাল সোনেস্টার অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিক স্মৃতিচারণ পর্বে অংশগ্রহণকারী চবিয়ানরা গল্পে গল্পে ফিরে যান সবুজ ক্যাম্পাসে। টিপু চৌধুরী ও সাবিনা নীরু’র উপস্থাপনায় তারুণ্যের দারুণ সব স্মৃতি রোমন্থন করেন তারা। অনেকে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। টিপু চৌধুরীর লেখা কবিতা ও তাজুল ইমামের গানে নির্মিত ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী সবাইকে ফিরিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অনুষ্ঠানে হার্ভার্ড, এমআইটি অ্যালমনাই ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবীরা সপরিবারে অংশ নেন। 
 
এ সময় বিশেষ আকর্ষণ ছিল কনভেনশনের স্মরনিকা ‘বাতিঘর’ এর মোড়ক উন্মোচন। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক সম্মাননা জানানো হয় ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়ার সময় বক্তারা জানান, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী অংশ নেন। তাদের মধ্যে  ১৬ জন শহীদ হোন। ১৯৯২ সাল থেকে তাদের তালিকা সংগ্রহের কাজ করছেন সাইফুর রহমান চৌধুরী টিপু। ক্রমান্বয়ে তাদের সবাইকে সম্মাননা জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। বিগত দিনে সাংগঠনিক কাজের স্মীকৃতিস্বরুপ কনভেনশনে আসা বিভিন্ন স্টেইট প্রতিনিধি, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য-পরিচালক এবং আয়োজকদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী। 

ডিনার শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্টেট চবিয়ানদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি গান পরিবেশন করেন খ্যাতিমান শিল্পী রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা, নকিব খান, সামিনা চৌধুরী, লীনা তাপসী ও কিশোর দাশ। গানে গানে সুরের মূর্ছনায় তারা মুগ্ধ করে রাখেন চবিয়ানদের। প্রিয়া-তুষার ও তাম্রচূড়া’র দলের সদস‍্যদের নাচ অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। স্মৃতি, তারুণ্য আর ভালোবাসার সম্মিলনে মুগ্ধতায় ভরা দুটি দিন কাটিয়ে অ‍্যালমনাইরা ঘরে ফিরে যান। 

Read Entire Article