জরাজীর্ণ ভবন। কোথাও কোথাও খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। কয়েকটি পরীক্ষা ছাড়া বেশিরভাগ পরীক্ষাই করতে হয় বাইরে থেকে। শয্যা সংকটে রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এমনই বেহাল অবস্থায় চলছে ভোলার মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। ১৯৮৬ সালের দিকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থাপিত হয়। বর্তমানের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। ২১টি চিকিৎসকের পদ থাকলে চিকিৎসক রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ মোট তিনজন। নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
দুদিন আগে সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন শাহনাজ বেগম। তবে এখনো সুস্থ হয়নি শিশুটি। শাহনাজ বেগম বলেন, ‘এখানে কোনো শিশু ডাক্তার নেই। যারা আছেন তারাই দেখেন। ভালো না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে যেতে হবে।’
হাসপাতালে ১০ দিন ধরে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেন। তিনি জানালেন, বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক না থাকায় কেউ তার রোগ নির্ণয় করতে পারছেন না। এজন্য আজ তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
বেড না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন আল আমিন ও জুয়েল। তারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ থাকে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা। ফলে কষ্টের শেষ থাকে না। মশার উৎপাততো আছেই।
আশঙ্কার কথা জানিয়ে রোগীর স্বজন রোমান হোসেন বলেন, ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। ভয়ে থাকি কখন না জানি ইটের টুকরা ও পলেস্তারা খসে পড়ে। ভবনটি সংস্কার করা জরুরি।
আরেক রোগীর স্বজন কামাল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে রক্তের কয়েকটি পরীক্ষা ছাড়া কিছুই হয় না। ডাক্তাররা পরীক্ষার জন্য লিখে দিলে আমরা বাইরে থেকে করে আনি। এতে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়। এখানে যদি এক্স-রেসহ সব পরীক্ষা করানো হতো, তাহলে অনেক উপকার হতো।’
এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল জানান, সমস্যার বিষয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কিছুই সমাধান হয়নি।
ভোলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনিরুল ইসলাম ইসলাম বলেন, খুব শিগগির মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট দূর করা হবে। যন্ত্রাংশ ও জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/এমএস