নরওয়ের ক্রাউন প্রিন্সেসের (যুবরাজ্ঞী) বড় ছেলে মারিয়াস বোর্গ হোইবির বিরুদ্ধে চার নারীকে ধর্ষণসহ ৩২ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। টানা এক বছর ধরে তদন্তের পর পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। সে ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি আদালতে অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হলো।
সোমবার নরওয়ের রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি স্টুরলা হেনরিক্সবো জানান, আগামী বছরের শুরুর দিকে হোইবির মামলার শুনানি শুরু হবে। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
২৮ বছর বয়সী মারিয়াস বোর্গ হোইবি নরওয়ের ক্রাউন প্রিন্সেস মেটে-ম্যারিটের ছেলে এবং সিংহাসনের উত্তরসূরি ক্রাউন প্রিন্স হাকনের সৎ ছেলে।
হোইবির অপরাধ এখন নরওয়েজুড়ে আলোচনায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাগুলো বেশ স্পর্শকাতর এবং খুবই গর্হিত। হোইবির দ্বারা ধর্ষণ ছাড়াও নারীরা নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে।
নরওয়ের ভবিষ্যৎ রাজার সৎপুত্র মারিয়াস বোর্গ হোইবিকে গত বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং নভেম্বর মাসে তিনবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১০ মাস ধরে তদন্তের পর নরওয়েজিয়ান পুলিশ জুনে মামলাটি প্রসিকিউটরদের কাছে হস্তান্তর করে। প্রসিকিউটররা আবার পুলিশি তদন্তের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করেন।
হোইবির আইনজীবী পেটার সেকুলিক বলেন, তার মক্কেল অভিযোগগুলোকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো অন্যায় স্বীকার করেননি। বিশেষ করে যৌন নির্যাতন এবং সহিংসতার ক্ষেত্রে তিনি চুপ আছেন।
২৮ বছর বয়সী এই যুবক কোনো রাজকীয় পদবি বা সরকারি দায়িত্বে নেই। তাকে গত বছরের ৪ আগস্ট একটি হামলা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারের পর থেকে একের পর এক নারী নির্যাতনের তথ্য সামনে আসতে থাকে।
পুলিশ জানায়, তারা বিপুলসংখ্যক সাক্ষীর সাক্ষাৎকার, বেশ কয়েকটি তল্লাশি এবং বিস্তৃত ডিজিটাল উপাদান পর্যালোচনাসহ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত সম্পন্ন করেছে। ২০২৪ সালের শরৎ এবং ২০২৫ সালের বসন্তে হোইবিকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন বলে পুলিশ জানায়।
কৌঁসুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার হোইবির বিরুদ্ধে মোট ৩২টি ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে। চারটি ধর্ষণের ঘটনার কোনো কোনোটি তিনি মোবাইল ফোনে ভিডিও করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, রাজপরিবারের সদস্য হলেও হোইবিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অন্য সাধারণ মানুষদের মতোই তার বিচার করা হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে কারাগারে যেতে হবে।