৫ আগস্ট সকালে সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে ঘুম ভাঙে: অধ্যাপক ইয়াসমিন

1 month ago 7

রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৬ জনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন তার জবানবন্দি পেশ করেছেন।

তিনি, চাঁনখারপুলে বাসার ছাদ থেকে দেখা ৫ আগস্টের ঘটনার বর্ণনা দেন ট্রাইব্যুনালে।

আসামি আরশাদ হোসেনের পক্ষে সাক্ষীকে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। ইমাজ হোসেনের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী জিয়াউর রশিদ টিটো, আসামি সুজন হোসেন ও নাসিরুল ইসলামের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হোসেন। আর পলাতক আসামিদের পক্ষে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবুদ্দিন। পরে এ মামলায় আরও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন গতবছর ৫ আগস্ট বাসার ছাদ থেকে দেখেছেন চাঁনখারপুলের ঘটনা। নিজের মোবাইলে ধারণ করেছেন অনেক কিছু।

শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের ৪৮ বছর বয়সী এই শিক্ষিকা মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) চাঁনখারপুল মামলায় প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন ট্রাইব্যুনালে।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, গতবছর ৫ আগস্ট সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। চাঁনখারপুল মোড়েই আমার বাসা। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি পুলিশ মাইকে স্থানীয় লোকজনকে ঘর হতে বের হতে নিষেধ করছে। ওই দিন আন্দোলনকারীদের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ছিল। আমি আমার ছাত্রদের ফোন করে কর্মসূচির বিষয়ে জানতে পারি যে, তারা শহীদ মিনারে প্রবেশের চেষ্টা করছে কিন্তু পুলিশ শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে বাসার ছাদে উঠে দেখি চাঁনখারপুল মোড়ে ছাত্র-জনতা সবাইকে বের হয়ে আসার জন্য আহ্বান করছিল। ওই সময় পুলিশের কয়েকটি গাড়ি আসে এবং গুলি করতে থাকে। তখন আন্দোলনকারীরা হোসনি দালান রোড, নাজিমুদ্দিন রোডসহ আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেয়। পুলিশ বিভিন্ন দিকে থাকা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে অনবরত গুলি ছুঁড়তে থাকে। আনুমানিক সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে চাঁনখারপুলস্থ নিমতলি গলির বাকরখানির দোকানের সামনে একটি ছেলেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখি। আন্দোলনকারীরা তাকে অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ এই শিক্ষিকার মোবাইলে ধারণ করা এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ক্লিপ ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে গতবছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আনাসসহ কয়েকজন পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ৬ মাস ১৩ দিনে তদন্ত শেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার। গত ২০ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয় সংস্থাটি। এটিই ছিল জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন।

পরে গত ২৫ মে এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেন। এ মামলায় ৭৯ জনকে সাক্ষী করেছে প্রসিকিউশন। পরে গত ১৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

এফএইচ/এসএনআর/এএসএম

Read Entire Article