দীর্ঘ ৯ বছর পর ইরাক থেকে দেশে ফিরে স্ত্রীর মরদেহ পেলেন স্বামী আলামিন মন্ডল। স্বামীকে বিমানবন্দরে আনতে যেতে না পারার অভিমানে পপি আক্তার (৩০) নামে ওই স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপেচা জটু মিস্ত্রির পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আলামিন-পপি দম্পতির ঘরে আদিব মন্ডল (১৩) নামে একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বামীকে আনার জন্য বিমানবন্দরে যেতে চেয়েছিলেন পপি। কিন্তু তাকে না নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ভোরে ঢাকায় বিমানবন্দরে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পপির সঙ্গে অন্যদের মনোমালিন্য হয়। এ কারণে অভিমান করে তিনি নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুবাই বিমানবন্দরে যাত্রা বিরতিকালে পপির সঙ্গে আলামিনের কথা হয়। আলামিন জানায়, তাদের মধ্যে ভালোমতোই কথাবার্তা হয়। তাকে বিমানবন্দরে আসতে বললেও তিনি যাবে না ছেলে আদিবকে পাঠাবে বলে জানায়। কিন্তু বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর মরদেহ পেয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেল বলে আহাজারি করতে থাকে।
জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর ইরাকে প্রবাস জীবন কাটানোর পর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেশে নিজ বাড়িতে ফেরেন আলামিন মন্ডল। বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে নিজের পাকা টিনশেড ঘরের কাঠের আড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় পরিবারের লোকজন গিয়ে লোহার শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মরদেহ নিচে নামায়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ সুরতহাল প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এখন বিভিন্ন ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি জানান, স্থানীয়দের ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন পর আলামিন ইরাক থেকে দেশে ফিরেছেন। তাকে নিতে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে গেলেও স্ত্রী পপি বেগমকে সঙ্গে নেননি। ধারণা করা হচ্ছে, এ অভিমানে গৃহবধূ পপি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।