যুদ্ধ থেকে ফিরতে চায় ইয়েমেনের যোদ্ধারাও, এলো বিশেষ ঘোষণা

2 hours ago 4

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা বলছে, গাজার বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা সামরিক অভিযান বন্ধ করবে। ইয়েমেনভিত্তিক হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ আল-বুখাইতি এ কথা বলেছেন।

আলজাজিরার শনিবারের (১৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিষয়ে ইয়েমেনভিত্তিক হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ আল-বুখাইতি এক্সে একটি পোস্টে করেন। তাতে বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাবে কিন্তু সংঘাতের অবসান ঘটাবে না। 

তিনি আরও বলেন, গাজাকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে ইয়েমেনের ভূমিকা কার্যকর ছিল। কারণ, এটি শত্রু এবং তার মিত্রদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে এবং তাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। তাই আমরা আশা করি তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপায়ে শত্রুতা অব্যাহত থাকবে।

আল-বুখাইতি বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে- ফিলিস্তিনে আগ্রাসন বন্ধ হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক অভিযান বন্ধ হবে। আর নৌচলাচলের স্বাধীনতা সকল দেশের জন্য একটি সাধারণ অধিকার; কারও জন্য নির্বাচিত অধিকার নয়।

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। যুদ্ধের নামে গাজায় ইসরায়েলের নারকীয় হামলার প্রতিবাদে হুতিরা এ পদক্ষেপ নেয়। সেই সঙ্গে লোহিত সাগর এবং আদেন উপসাগরে চলাচলকারী পশ্চিমা জাহাজগুলোতেও নিয়মিত হামলা করে আসছে হুতিরা। তখন থেকেই গোষ্ঠীটি বলছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে তাদের সাধ্যানুযায়ী প্রতিরোধ করা হচ্ছে। গাজা নিরাপদ না হলে ইয়েমেন ঘেঁষে পশ্চিমা জাহাজ নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে না।

এদিকে যুদ্ধবিরতির শর্ত সই হওয়ার পরেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২ দিনে অন্তত ১১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২৮ শিশু ও ৩১ নারী। এখন পর্যন্ত, ১৫ মাসে গাজার সংঘাতে ৪৭ হাজার মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ১০ হাজার ৬৪২ জন আহত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির ফলে গাজার চলমান সংঘাতের অবসান হতে যাচ্ছে। ১৫ মাসের ভয়াবহ সংঘাতে প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষাধিক মানুষ আহত হয়েছে। এই চুক্তি আগামীকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হবে।

১৭ জানুয়ারি ইসরায়েল সরকারের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি অনুমোদন করে। এরপর পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার বৈঠকে চুক্তিটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়। অর্থাৎ যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রথম ধাপে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ধীরে ধীরে প্রত্যাহার হবে। হামাসের হাতে আটক ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দি মুক্তি পাবে। বিনিময়ে, ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি পাবেন।

দ্বিতীয় ধাপে প্রথম ধাপের ১৬ দিনের মধ্যে আলোচনায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজার পূর্ণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি নির্ধারণ করা হবে।

তৃতীয় ধাপে গাজার পুনর্গঠন কাজ শুরু হবে, যা মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। নিহতদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়টিও আলোচিত হবে।

Read Entire Article