সারাদেশে আকাশমণি-ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংসে মাঠপর্যায়ে অভিযান শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর এ কার্যক্রম শুরু হলো।
পরিবেশ ও মাটির ক্ষতি করে এমন গাছ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় সরকারি উদ্যোগে এসব চারা উৎপাদন, রোপণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ কারণে কৃষি বিভাগের অধীন মাঠপর্যায়ের কর্মীরা নার্সারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে গাছের ধ্বংস করছেন। সঙ্গে প্রতিটি গাছের জন্য দেওয়া হচ্ছে ৪ টাকা করে প্রণোদনা। পাশাপাশি নার্সারি মালিকরা আর এ চারা উৎপাদন করবেন না এমন অঙ্গীকারও করছেন। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগ্রাসী এসব প্রজাতির বদলে নারিকেল, আম, কাঁঠাল, নিম, তালসহ নানা দেশি গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
চলতি বছরের ১৫ মে সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা তৈরি ও রোপণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের তথ্য বলছে, সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার ৭৭টি আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা আছে। এরমধ্যে আকাশমনি ৭৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮৪টি এবং ইউক্যালিপটাস এক কোটি ৪১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৩টি।
৪৯টি জেলার ৪৩০টি উপজেলায় এ দুটি গাছের চারা ধ্বংসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) পর্যন্ত ১৬১টি উপজেলায় ৬৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫২০টি গাছের চারা ধ্বংস করা হয়েছে। ৪২টি উপজেলায় আংশিক ধ্বংস করা হয়েছে, এসব উপজেলায় চারার সংখ্যা ২৪ লাখ ১০ হাজার ৭৭০টি। বাকি ২২৭টি উপজেলায় এক কোটি ৯ লাখ ৪৮ হাজার ২৩১টি চারা ধ্বংস করা বাকি আছে।
ধ্বংস করা প্রতিটি চারা বাবদ কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে চার টাকা করে প্রণোদনা। এরই মধ্যে প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কৃষকদের মধ্যে নারিকেল, আম, কাঁঠাল, নিম, তালসহ ৩৩ লাখ দেশি ফলদ ও বনজ গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আমরা মাঠপর্যায়ে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ চিহ্নিত করে ধ্বংস করছি। একইসঙ্গে স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে মানানসই, মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখে এমন গাছের চারা কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। যেখানেই ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি চারা উৎপাদন বা বিপণন হবে, সেখানেই সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাতে ভবিষ্যতে এ গাছের চারা উৎপাদন না করেন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এনএইচ /এমএএইচ/জিকেএস