ইসলামের আলোকে দেশ সাজাব :  মিজানুর রহমান আজহারী

2 days ago 13

বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ইসলামের আলোকে দেশ সাজাব। কোনো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি এ দেশে হতে দেওয়া যাবে না। ১৫ বছরে দেশে প্রচুর লুটপাট হয়েছে। অন্য দেশ উন্নয়ন করতে ব্যস্ত; তখন আমার দেশের সরকার লুটপাটে ব্যস্ত থাকেন। একদল যাই; আরেক দল এসে লুটে খায়। আমাদেরকে কোরআনের আলোকে দেশ গড়তে হবে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে যশোরের পুলেরহাট আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ ময়দানে তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের সমাপনী দিবসে তাফসির পেশকালে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সম্মান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মহাবিশ্বের সব সৃষ্টির জন্য আল্লাহ রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন। জলে স্থলে মানুষের বাহন দিয়েছেন। আকাশ এবং জমিনে যা কিছু আছে সবই মানুষের কল্যাণে দেওয়া হয়েছে। 

সুললিত কণ্ঠে আল কোরআনের আয়াতের তাফসির পেশকালে ড. আজহারী বলেন, চাঁদ-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র সবই আল্লাহ মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন। সর্বত্র মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। মানুষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এ স্বাধীনতা মানুষ ভালো অথবা মন্দ উভয় কাজে ব্যবহার করতে পারে। 

প্রায় দশ লাখ লোকের উপস্থিতিতে মুহুর্মুহু তাকবির ধ্বনির মধ্যে তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা বলেন, সমাজে হিংসা বিদ্বেষ বিশৃঙ্খলার বিস্তৃতি ঘটেছে। মানুষের কাজে পশুত্বকেও হার মেনে যায়। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে বর্বর হামলা চালাচ্ছে। সভ্যতাকে তারা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

আজহারী বলেন, বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে। কমছে মানুষ। নাক কান চোখ মুখ সবার আছে। কিন্তু সমাজে ভালো মানুষ কমে যাচ্ছে। আল কোরআনের আলোকে জীবন গঠন করে উন্নত ও সুন্দর মানুষ হতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষ মৃত্যু ছাড়া সবকিছু জয় করতে পারে। মানুষ হারে না। মানব সম্পদের উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশকে উন্নত করা সম্ভব না। 

জনপ্রিয় এই বক্তা বলেন, উগ্রবাদ কিংবা জঙ্গিবাদ নয়, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের বাণী তুলে ধরতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উত্তম পন্থায়। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের সদ্ব্যবহার করে মানুষকে ইসলামের পথে আনতে হবে। ধাপে ধাপে সংসদকেও ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে হবে। একমাত্র ইসলামকে অনুসরণ করেই শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যাবে। অন্য কোনো পন্থা শুধু অশান্তিই বয়ে আনবে।

মাহফিলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিনও বক্তৃতা করেন। বাদ মাগরিব তাফসির পেশ করেন আরেক ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তরুণ রাজনীতিবিদ অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ৫ আগস্টের আগে এমন একটি ইসলামি মাহফিল করা ছিল অসম্ভব। ফ্যাসিবাদি শাসনের সময় মানুষের মতপ্রকাশের সুযোগ ছিল না। তিনি সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যশোরবাসী এই আয়োজনে গর্বিত।

আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন বলেন, যশোরবাসীর জন্য আজ এক গৌরবের দিন। তাফসিরুল কোরআন মাহফিল এ অঞ্চলের মানুষের জন্য ইসলামের বাণী প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তিনি যশোর খুলনার মানুষের জন্য আদ-দ্বীনের ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ঘোষণা দেন।

মাহফিলের শেষদিনে খুলনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মাগুরাসহ এতদাঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যোগ দেন। তরুণদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। নয়টি বৃহৎ প্যান্ডেলে মাহফিলের শ্রোতাদের বসার আয়োজন করা হয়। যশোর শহরের আট বর্গকিলোমিটার এলাকায় মানুষের সমাগম ঘটে। 

Read Entire Article