ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বায়েক, গোপীনাথ পুর, কসবা পৌরসভার গ্রামগুলোতে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল সিমকার্ড। এতে করে সীমান্তে চোরাচালান বৃদ্ধিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। এ ছাড়া অবাধে ভারতীয় মোবাইল সিমের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অনেকটাই নীরব।
সরেজমিনে জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর, ধজনগর, বায়েক, কোল্লাপাথর, মাদলা, খাদলা, বেলতলী পুটিয়া, গোপীনাথপুর ইউনিয়ের ধজনগর, কুইয়াপানিয়া, লক্ষ্মীপুর, কাজিয়াতলী, বড় ঠোঁটা, সৈয়দপুর, দোলতপুর, বড় মোড়া, খিড়নাল, বাগান বাড়ি, জৈঠুয়া মুড়া, ফতেহপুর, রামপুর, পৌর সভার রয়েছে তারাপুর, আকবপুর, গঙ্গানগর, আখড়, কায়েমপুর ইউনিয়নের চক বস্তুা কালতা, জাজিসার গ্রামগুলোতে ভারতীয় সিমকার্ডে চলে ইন্টারনেট ভিত্তিক সকল কার্যক্রম।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের এসব গ্রামের বাজারগুলোতে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা স্মার্ট ফোন নিয়ে তরুণদের গল্প, জমজমাট আড্ডা দিতে দেখা যায়। আড্ডাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তাদের এই মোবাইলগুলোতে বাংলাদেশি কোনো ফোন কোম্পানির সিমকার্ড নেই। তরুণেরা মোবাইল ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা না পেয়ে ভারতীয় মোবাইল ফোনের সিমকার্ড ব্যবহার করেন।
কসবা সীমান্ত অঞ্চলের পুটিয়া খাদলা বাজারে দেখা মেলে একদল তরুণের। তারা গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটস্অ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ ইন্টারনেট ভিত্তিক ফ্রি-ফায়ার, পাবজির মতো গেমও খেলছেন। তারা তাদের মোবাইলে ব্যবহার করেন ভারতীয় কোম্পানির এয়ারটেল, জিও, ভোডাফোন, রিলায়েন্স, এয়ারসেল, টেলিনরসহ বিভিন্ন কোম্পানির সিম।
স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সিমের অবাধ ব্যবহারের কারণে সীমান্তের ওপারে ভারতীয় চোরাকারবারিদের সঙ্গে বাংলাদেশের চোরাকারবারি ও মানবপাচারকারীরা মোবাইলে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। চালাচ্ছেন মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এতে করে সীমান্ত অঞ্চলে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।
তবে ভারতীয় মোবাইল সিমকার্ড ব্যবহারকারী বাংলাদেশি নাগরিকেরা জানান, বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক না থাকায়, তারা বাধ্য হয়েই সেখানকার সিমকার্ড ব্যবহার করছেন।
কসবা পুটিয়া সীমান্তবর্তী গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরমান বলেন, আমাদের এই এলাকার খাদলা, মাদলা, পুটিয়া, বেলতলী এসব এলাকায় বাংলাদেশি নেটওর্য়াকের কোনো সুযোগ সুবিধা নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়ে ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানির সিমকার্ড ব্যবহার করি। এই সিমকার্ড ব্যবহার করলে আবার বিজিবিও আমাদের মাঝে মধ্যে হয়রানি করে। বর্তমান সরকার যদি আমাদের সীমান্ত অঞ্চলে মোবাইল নেটওর্য়াকের ব্যবস্থা করে দিতেন, তাহলে আমরা অনেটা উপকৃত হতাম।
সীমান্তের বাসিন্দা ইকবাল মিয়া বলেন, আমাদের এই এলাকার আশে পাশে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি বা অন্য কোনো সিমকার্ডের নেট পাওয়া যায় না। তাই আমরা ইন্ডিয়ান এয়ারটেল, জিও, ভোডা এই সিমগুলো চালাই।
বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ আমরা নেওয়া শুরু করেছি। আমাদের দেশের যে নেটওর্য়াকগুলো আছে, তাদেরকে বলেছি, এই এলাকায় তাদের নেটওর্য়াট উন্নত করার জন্য। যাতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষের অন্য দেশের সিম কার্ড ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন।