কোরআনবিরোধী নারী কমিশন বাতিলের দাবিতে হেফাজতের গণসমাবেশ

3 months ago 32

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন বাতিল, আলেম-ওলামা ও নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বিশাল গণসমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

সোমবার (১২ মে) বিকেল ৩টায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, নাটোর জেলা শাখার উদ্যোগে নাটোরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, নাটোর জেলা সভাপতি মুফতি আব্দুল্লাহ মাদানীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার।

এছাড়াও সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- মুফতি আব্দুল মালেক, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মুফতি ফায়সাল আহমদ হাবিব, মাওলানা মুজাজ্জাজ নাঈম, মাওলানা আহমদ মোস্তফা ও মুফতি আব্দুল আহাদ প্রমুখ।

মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী তার বক্তব্যে বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি- আরকান আর্মিকে করিডর দেওয়ার জন্য নয়। কেউ যদি করিডর বাস্তবায়নের দুঃসাহস দেখায়, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তার উপদেষ্টা পরিষদকে চরম মূল্য দিতে হবে।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির সুপারিশ কেবল শেখ হাসিনা ও তার অনুগতদের রক্ষা করতেই এসেছে। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। এই দেশে কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন থাকতে পারে না।

নারী কমিশনের সুপারিশে আমরা লজ্জিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। যারা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে নাস্তিকতা জাতির ওপর চাপিয়ে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন যদি অবিলম্বে বাতিল না করা হয়, তবে দেশের তাওহিদি জনতা দুর্বার গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, আওয়ামী লীগ একটি খুনি, সন্ত্রাসী ও গণহত্যাকারী দল। এই দলের তৎপরতা নিষিদ্ধ করলেই কেবল শান্তি ফিরবে। অধ্যাপক ইউনূসকে বলছি- নয় মাস পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলটি নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তা না হলে ঢাকাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার মতো কঠোর কর্মসূচি নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যে রাষ্ট্র শাপলা চত্বরে শহীদদের বিচার করতে ব্যর্থ, সেই রাষ্ট্র আজ ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাওহিদি জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্র, আলেম-ওলামা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক- সবাইকে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ইসলাম ছাড়া দুনিয়াতে মুক্তি নেই, আখিরাতে শান্তি নেই। তাই হেফাজতে ইসলামের ছায়াতলে এসে ঈমান রক্ষার আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

সমাবেশে নেতারা একযোগে ঘোষণা দেন, যতক্ষণ না কোরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন ও ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব প্রস্তাব বাতিল করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাওহিদি জনতা রাজপথ ছাড়বে না। ইনশাআল্লাহ।

Read Entire Article