এই ঈদে আপনার বসার ঘরটিকে নতুন রূপে সাজানোর কথা ভাবছেন কি? যদি এমন কিছু করতে চান, তাহলে প্রথমেই বেছে নিন আপনার পছন্দের একটি থিম বা স্টাইল। থিম ভিত্তিক ঘরের সাজসজ্জা আমাদের দেশে বেশ নতুন একটি চর্চা।
বর্তমানে নতুন বাড়ি বানাচ্ছেন যারা, বা যারা ঘরের সাজসজ্জা নিয়ে অনেকটা সচেতন, শুধু তারাই হয়তো ভাবেন ঘরের থিম নিয়ে। বেড়ে ওঠার সময় এই সচেতন মানুষদের আমরা বরাবরই ‘শৌখিন’ মানুষ বলে চিনতাম। তবে আজকের আধুনিক প্রজন্মগুলো কিন্তু প্রায় সবাই একটা পিকচার পারফেক্ট বসার ঘরের স্বপ্ন দেখেন।
বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ঈদের সময় নতুন জামা-জুতোর পাশাপাশি বাড়ির নতুন আসবাব কেনা আর ঘরকে নতুন একটি রূপ দেওয়ার চল আছে অনেক আগে থেকেই। তাহলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে থিম ভিত্তিক রূপ দেবেন কীভাবে? কীভাবে ঠিক করবেন এই থিম? জেনে নিন এমন ৬টি থিমের বিষয়ে-
১. বোহেমিয়ান বা বোহো
বোহেমিয়ান বা বোহো থিমটি বর্তমানে বেশ ট্রেন্ডি। এই স্টাইলের ঘর শৈল্পিক, স্বাধীন ও রঙিন জীবনধারাকে প্রতিফলিত করে। বোহেমিয়ান থিমের ঘরে ব্যবহৃত হয় এক্সেন্ট্রিক প্যাটার্ন, উজ্জ্বল রঙ, মিশ্র টেক্সচার এবং হস্তনির্মিত বা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বিভিন্ন আসবাব। বোহো ডিজাইনে কোনো কঠোর নিয়ম নেই, বরং এটি ব্যক্তিত্ব ও সৃজনশীলতার প্রকাশের একটা মাধ্যম।
২. মিনিমালিস্টিক
মিনিমালিজম থিমটি সবথেকে অল্প আসবাব এবং সর্বাধিক প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রতি গুরুত্ব দেয়। এতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় এবং অর্থপূর্ণ জিনিস রাখা হয়। রঙের প্যালেট সাধারণত নিউট্রাল এবং শান্তিপূর্ণ হয়, যেমন সাদা, কালো, ধূসর এবং বেইজ।
৩. কনটেম্পোরারি
কনটেম্পোরারি স্টাইল আধুনিক এবং ট্রেন্ডি ডিজাইনকে প্রতিনিধিত্ব করে। এতে ক্লিন লাইন, স্মার্ট ফার্নিচার এবং আপ-টু-ডেট উপকরণের ব্যবহার করা হয়। রঙের প্যালেট সাধারণত নিউট্রাল হয়, তবে এক্সেন্ট রঙের মাধ্যমে চমক যোগ করা যায়। অর্থাৎ যখন যা নতুন, তা যুক্ত হয় এ থিমে।
৪. রাসটিক
রাসটিক স্টাইল পুরাতনকে নতুন করে ফুটিয়ে তোলে। এতে কাঠ, পাথর, মাটির পাত্র এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। রঙের প্যালেট সাধারণত প্রকৃতির রঙের সঙ্গে মিলে যায়, যেমন বাদামী, খয়েরি, সবুজ এবং বেইজ।
৫. ট্র্যাডিশনাল
ট্র্যাডিশনাল থিমটি ক্লাসিক এবং টাইমলেস ডিজাইনকে প্রাধান্য দেয়। এতে কারুকার্য করা কাঠের ফার্নিচার, ঐতিহ্যবাহী কার্পেট এবং অন্যান্য অলঙ্করণ দেখা যায়। রঙের প্যালেট সাধারণত গাঢ় এবং উষ্ণ হয়, যেমন মারুন, গাঢ় নীল এবং সোনালী।
৬. উজ্জ্বল ও রঙিন
ব্রাইট রঙের ব্যবহারে ঘরকে একটি শিল্পেও রূপ দিতে পানের আপনি। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পর্দা, কার্পেট, সোফা, কুশন ও ফুলদানি দিয়ে নিজের মনমতো সাজাতে পারেন আপনার স্বপ্নের বসার ঘর
বসার ঘরের সাজসজ্জা শুধু ঘরকেই সুন্দর করেনা, বরং এটি ঘরে থাকা মানুষের রুচি, ব্যক্তিত্ব এবং জীবনযাপনের ধরণকেও প্রকাশ করে। ডেকোরেশনের মাধ্যমে ঘরের পরিবেশ, মেজাজ এবং আবহ তৈরি হয়, যা ঘরে প্রবেশকারী যে কাউকে একটি বিশেষ অনুভূতি দেয়।
এএমপি/এমএস