চতুর্মুখী আন্দোলনে উত্তাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

7 hours ago 1

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চতুর্মুখী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে শাখা ছাত্রদল এবং প্রক্টরিয়াল বডিসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীরা।  

এ ছাড়াও শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী এবং স্লাট শেমিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে নারী শিক্ষার্থীরা। 

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আলাদা আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

প্রশাসনকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়ে পদত্যাগের দাবি ছাত্রদলের 

রোববার দুপুর ১টার দিকে ফের প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলা ঝুপড়ি হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, রেজিস্ট্রার এবং প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলে তাদের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল। 

এ সময় নেতারা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। রেজিস্ট্রার ছাত্রদলকে নিয়েও কটুক্তি করেছে। প্রশাসনকে তার কাজের জন্য লাল কার্ড দেখিয়ে পদত্যাগের দাবি জানান তারা।  

এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে শাখা ছাত্রদল। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের দায় নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা।

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবিতে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’র কর্মসূচি

এদিকে রোববার দুপুরে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে ফের বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে বামপন্থি কিছু সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

তাদের ৭ দফা দাবি হলো, আহতদের মানসম্মত চিকিৎসা ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা, চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মামলার অসঙ্গতি দূর করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন, সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সর্বশেষ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ও যোগ্য কর্তৃপক্ষ নিয়োগ। 

এর আগে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলা ঝুপড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ ৭ দফা দাবি জানায় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’। পরদিন শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এ আর মল্লিক (প্রশাসনিক ভবন) ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ নামকরণ করেন তারা। 

এদিন সন্ধ্যায় একই দাবিতে মশাল মিছিল নিয়ে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় প্রক্টর অফিসের দেয়ালে রঙ দিয়ে ‘প্রতীকী রক্ত’ প্রতিবাদ জানায় তারা। কবিতা ও গান গেয়েও প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের। পাশাপাশি প্রক্টর অফিসের গেটে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি টাঙিয়ে প্রতিবাদ জানায় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বামপন্থি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

এদিকে রোববার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কাননকে হেনস্তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার যথোপযুক্ত বিচার দাবি করেন তারা। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, শুক্রবার প্রশাসনিক ভবনের নাম কেটে ‘জমিদার ভবন’ নাম লিখে দেয় ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে বামপন্থি কিছু সংগঠনের নেতারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদের সঙ্গে তীব্র বাগবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

স্লাট গেমিংয়ের প্রতিবাদে নারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

এদিকে একইদিন দুপুর ১টার দিকে ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীকে স্লাট শেমিংয়ের প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া স্লাট শেমিংয়ের প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। 

Read Entire Article