দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে অকার্যকর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের এই প্ল্যাটফর্মকে পুনরায় সচল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ঢাকসু), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখনো ঘোষণা হয়নি চাকসু নির্বাচনের তফসিল।
এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
রোববার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্ন করেছি। চাকসু ভবনে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় সংস্কার করেছি। ভোটার তালিকার কাজও প্রায় শেষের দিকে। এখন চাকসুর অংশীজনদের সঙ্গে দুয়েক দিনের মধ্যে একটি মিটিং করে এ সপ্তাহে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, সর্বশেষ ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাও ভোটার হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। নির্বাচনী আচরণবিধির খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। তফসিলও দ্রুত ঘোষণা করা হবে। তা এ সপ্তাহের শেষেই।
চাকসুর নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান কর্মসূচি : এদিকে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, শতভাগ আবাসন ও সেশনজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টা ৪০ পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। এ সময় চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের দল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার চাকসুর তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয় সংগঠনের নেতাদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের অধিকার। আমরা তাদের এই অধিকার বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। চাকসু নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই আমরা তফসিল ঘোষণা করব।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়বার নির্বাচন হয়েছে চাকসুতে। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর ছাত্র সংগঠনগুলোর মুখোমুখি অবস্থান, কয়েক দফা সংঘর্ষ ও উপযুক্ত পরিবেশ না পাওয়ায় চাকসু নির্বাচনের মুখ দেখেনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।