ঠাকুরগাঁওয়ে জনস্বার্থবিরোধী হয়রানিমূলক প্রি-পেইড মিটার চালুর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে নেসকো কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জেলার গ্রাহকরা।
সোমবার (১২ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের ব্যানারে জেলা প্রশাসক চত্বর থেকে জেলার নেসকো কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু হয় এবং কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রি-পেইড মিটারবিরোধী বক্তব্য দেন গ্রাহকরা।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর হাসান তানু বলেন, আগে টাকা পরে বিদ্যুৎ ঠাকুরগাঁওয়ে করতে দেওয়া হবে না। আমি বলতে চাই বাংলাদেশের বড় বড় বিভাগীয় শহর রয়েছে, সিটি কর্পোরেশন রয়েছে সেগুলোতে বাস্তবায়ন করুন আগে। আমাদের মতো জেলায় যেখানে অধিকাংশ মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যায়, তাদের ঘাড়ে বিদ্যুতের এ খড়্গ চাপিয়ে দিবেন না। আমরা প্রি-পেইড মিটার চাই না।
সদস্য সোহেল রানা বলেন, কেন প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করবো এমন প্রশ্ন নেসকো কর্তৃপক্ষের কাছে রাখলে তারা কোনো উত্তরে গ্রাহককে খুশি করতে পারেনি। প্রি-পেইড মিটারে আগে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে অর্থনৈতিক অসুবিধা থাকলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এই মিটার ঠাকুরগাঁওয়ের মতো একটি প্রত্যন্ত জেলায় স্থাপন মানে নেসকোর একটি বিশাল জুলুমের পরিকল্পনা। আমরা এ পরিকল্পনাকে ধিক্কার জানাই।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের সদস্য সচিব আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, বিগত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে এ মিটার বাতিলে অনেক প্রতিবাদ হয়েছে। এখন নতুন করে এ প্রতিবাদ আমাদের করতে হচ্ছে। আমরা আমাদের জেলায় বিদ্যুতের গ্রাহকের ওপর এ জুলুম মেনে নেবো না। যখন গোটা জেলাজুড়ে প্রি-পেইড মিটারে ভোগান্তি নিয়ে সোচ্চার ,এখনো নেসকো জেলার সহজ সরল মানুষদের ফুসলিয়ে এ মিটার চালুর পাঁয়তারা করছে।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের আহ্বায়ক মাসুদ আহম্মদ সুবর্ণ বলেন, ২০০৩ সালে বিদ্যুৎ আইনে বলা আছে কোনো গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে হলে তাকে ১৫ দিন পূর্বে নোটিশ করতে হবে। কিন্তু প্রি-পেইড মিটারে রিচার্জ করে বিদ্যুৎ নিতে হবে। গ্রাহকের সুবিধা ভূলুণ্ঠিত করে কোনো ব্যক্তি ফায়দা হাসিল করতে চায়। আমরা তা করতে দিতে পারি না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই ঠাকুরগাঁওয়ে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে নেসকোকে সরে আসতে হবে। নয়তো নেসকো হঠাও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
পরে বক্তব্য শেষে ঠাকুরগাঁওয়ের নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলামের হাতে স্মারকলিপি দেন বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের একটি প্রতিনিধি দল।
ওই প্রকৌশলী বলেন, আমি স্মারকলিপি গ্রহণ করেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এটি অবগত করবো।
তানভীর হাসান তানু/এফএ/জেআইএম