পানি বাড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তার ৪৪ জলকপাট

2 months ago 35

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হওয়ায় নদীপাড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সন্ধ্যা ৬ টায় কাউনিয়া পয়েন্টে ২৮ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। ফলে দশমিক পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। বিকেল ৩টায় ২৮ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার, ভোর ৬ টায় ২৮ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার ও সকাল ৯টায় ২৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২ টায় ২৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।

অপরদিকে একইদিন বিকেল ৩ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরআগে এ পয়েন্টে সকাল ৬টায় ৫১ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ২৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়।

কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, ভোর থেকে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। বর্ষার আগে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী ও চরাঞ্চল গ্রামের মানুষদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করে।

তিনি আরও বলেন, এসময় বন্যা হলে নদীপাড়ের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পাশাপাশি নদীর তীরবর্তী আবাদি জমিগুলো তলিয়ে বাদাম ও শাক-সবজিসহ উঠতি বিভিন্ন ফসলের কিছুটা ক্ষতি হবে।

কাউনিয়ার চরগনাই গ্রামের বাসিন্দা আফতার আলী বলেন, ভোর থাকি নদীত পানি বারবের নাগছে। হামরা ভয়ত আছি। পানি কোনো সময় বা সময় বাড়িত ঢোকে। ঈদের আগত বন্যা হইলে খুব বিপদে পড়ি যামো।

একই এলাকার জয়নাল জানান, হঠাৎ পানি বাড়ার ফলে গবাদি পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢল আর গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তায় পানি বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের ৪৪ গেটই খুলে রাখা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলের দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে ভাটিরদিকে রংপুর জেলার কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই ভাটির অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আমাদের এখানে নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। তবে বর্ষা মওসুমের আগে তিস্তায় পানি বাড়ায় নদী পাড়ের মানুষের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করে।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, বন্যার এখন পর্যন্ত আভাস পাওয়া যায়নি। তবে বন্যায় যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া আছে। পাশাপশি স্থানীয় প্রতিনিধিদের সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখতে বলা হয়েছে।

জিতু কবীর/আরএইচ/এএসএম

Read Entire Article