সাজেদুল ইসলাম রাব্বি
শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি মানেই জীবনের নতুন দিগন্তে প্রবেশ। অনেকের জন্যই প্রথম চাকরি নতুন সূচনার দরজা খুলে দেয়। এই মুহূর্তে ভেতরে এক অদ্ভুত শঙ্কা কাজ করে। আমি পারব তো? কর্মক্ষেত্রে অন্যরা আমাকে কেমনভাবে নেবে? মূলত প্রথম চাকরিকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি সেই সময়, যখন নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার সেরা সুযোগ তৈরি হয়।
পেশাদারত্ব তৈরি
একজন তরুণ পেশাজীবীর জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে, প্রফেশনাল মানসিকতা গড়ে তোলা। অফিসে কেমনভাবে পোশাক পরছেন, সহকর্মীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছেন কিংবা বাইরে আপনার কথাবার্তায় অফিসের ভাবমূর্তি কেমনভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে, এসবই নিজের পরিচয় তৈরি করে। প্রথম চাকরিতেই অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারলে পুরো ক্যারিয়ারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সময়ের সদ্ব্যবহার
সময়ের সঠিক ব্যবহারও একটি বড় বিষয়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা কিংবা অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজগুলো আগে শেষ করার চেষ্টা শুধু কাজের মান বাড়ায় না বরং সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতনদের কাছে আপনার প্রতি আস্থা বাড়ায়।
জানার আগ্রহ
কাজের সঙ্গে নিজের শেখার আগ্রহ রাখাটাও সমান জরুরি। যে বিষয়গুলো জানা নেই; সেগুলো জিজ্ঞেস করতে সংকোচ করবেন না। প্রশিক্ষণ বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করুন, নতুন জিনিস জানার প্রতি কৌতূহল দেখান।
আরও পড়ুন
যোগাযোগ দক্ষতা
যোগাযোগ দক্ষতা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। স্পষ্ট কথা বলা, বাড়িয়ে না বলা, নিজের মতামত প্রকাশে সাহসী হওয়া, এসব গুণ কর্মক্ষেত্রে দ্রুত আলাদা করে তুলবে। অফিসিয়াল চিঠিপত্র কিংবা ই-মেইলেও পেশাদারত্ব বজায় রাখা সবার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক করবে। অনেক সময় ছোট দায়িত্বগুলো অবহেলিত হয়। অথচ ফাইল গোছানো বা রিপোর্ট সাজানোর মতো ছোট কাজেও দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায়। এসব ছোট কাজ সঠিকভাবে করলে বড় দায়িত্বগুলোও এসে জমা হয়।
কর্মক্ষেত্রে মানিয়ে নেওয়া
কর্মক্ষেত্রে মানিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অফিস সংস্কৃতি বোঝা। সিনিয়রদের কাজের ধরন লক্ষ্য করা, টিমওয়ার্কে সক্রিয় থাকা এবং অফিস রাজনীতি থেকে দূরে থাকা। এসবের মাধ্যমেই পরিবেশের সঙ্গে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন। নিজেকে আপডেট রাখা একেবারেই অপরিহার্য। নতুন সফটওয়্যার শেখা, প্রযুক্তির নতুন টুলস আয়ত্ত করা, কোম্পানি বা অফিসের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা শুধু বর্তমানেই নয়, ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুত রাখবে।
প্রথম চাকরিকে কেবল অভিজ্ঞতা অর্জনের জায়গা ভাবলে ভুল হবে। এটি হলো আত্মপ্রমাণের সেরা সুযোগ। দায়িত্বশীলতা, শেখার আগ্রহ এবং ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে যদি কাজ শুরু করা যায়, তবে অল্প সময়েই বস এবং সহকর্মীদের কাছে নিজের দৃঢ় অবস্থান তৈরি করা সম্ভব। এ অবস্থানই ক্যারিয়ারের পরবর্তী পদযাত্রা মসৃণ করবে।
এসইউ/এমএস