রাজধানীর হেয়ার রোডে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের বিষয়ে সুপারিশ করতে একটি সাব কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে জাজেস লাউঞ্জে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রধান বিচারপতির বাসভবন নিয়ে ভিডিও প্রেজেন্টেশন করা হয়। সভায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগেরসহ সব বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ অক্টোবর একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঐতিহসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনাটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। সে উদ্যোগের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেন প্রধান বিচারপতি। ওই সভায় ভববনটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে তা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৬ অক্টোবর প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এ চিঠির পর ৯ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আমিরুজ্জামান অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পরিচালককে বাসভবনটি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
ভবনটির ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলী তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ঢাকাকে পূর্ববঙ্গ ও আসামের রাজধানী করার পর উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যেসব আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল, সেসব ভবনের একটি হচ্ছে হেয়ার রোডের প্রধান বিচারপতির বাসভবন। মোঘল ও ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে ১৯০৮ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের পর ভবনটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্দেশে ব্যবহৃত হলেও পঞ্চাশের দশক থেকে ভবনটি প্রধান বিচারপতির বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুরাকীর্তি আইন, ১৯৬৮ অনুসারে ভবনটির মালিকানা ও ব্যবহার স্বত্ব সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে রেখে সংরক্ষণ করা হলে তা জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। ১১৬ বছরের পুরোনো স্থাপনাটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করা হলে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এর ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে স্থাপনাটির গুরুত্ব ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এফএইচ/বিএ/এএসএম