বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য

4 hours ago 4

আজ (১২ মার্চ) ১১ রমজান দিবাগত রাতে ইশার পর ১২তম দিনের তারাবিহ নামাজে আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে কোরআনের ১৫তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। এ পারায় রয়েছে পূর্ণ সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা কাহাফের শুরু থেকে ৭৮ নং আয়াত পর্যন্ত।

পবিত্র কোরআনের এ অংশে আমাদের দৈনন্দিন জীবন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষা ও দিক-নির্দেশনা রয়েছে:

১. দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তাআলা ও তার রাসুলের পর মানুষের ওপর সবচেয়ে বেশি ইহসান তার বাবা-মায়ের। তাই বাবা-মায়ের সাথে সদ্ব্যাবহার করা, বিনীত আচরণ করা, বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাদের দেখাশোনা ও সেবা-শুশ্রূষা করা, তাদের জন্য দোয়া করা সন্তানের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, ‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন’। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৩, ২৪)

২. আল্লাহ তাআলা যাদের সম্পদ দান করেন, তাদের এর সাথে কিছু দায়িত্বও দিয়ে দেন। সম্পদশালীদের ওপর প্রতিবছর জাকাত আদায় করা ফরজ। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও অন্যান্য দরিদ্র মানুষদের যথাসাধ্য সাহায্য করা, বিপদাপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো সম্পদশালীদের কর্তব্য। সম্পদ অন্যায় কাজে ব্যয় করা ও অপচয় করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরকেও। আর কোনভাবেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৬, ২৭)

৩. যে কোনো রকম লেনদেন ও বেচাকেনায় মুমিনের কর্তব্য ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখা। সঠিকভাবে পরিমাপ করা। ধোঁকা ও প্রতারণা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর মাপে পরিপূর্ণ দাও যখন তোমরা পরিমাপ কর এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন কর। এটা কল্যাণকর ও পরিণামে সুন্দরতম। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩৫)

৪. ব্যভিচার বা বিয়ে বহির্ভুত যৌন সম্পর্ক ইসলামে বড় গুনাহ। মুমিনের কর্তব্য ব্যভিচার থেকে দূরে থাকা। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩২)

৫. এতিমের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার সম্পদ আত্মসাৎ ইসলামে অত্যন্ত গর্হিত অন্যায় কাজ। এতিমের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব কারো ওপর অর্পিত হলে তার কর্তব্য তাদের সম্পদ উত্তমভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং তারা উপযুক্ত হলে তাদের সম্পদ তাদের বুঝিয়ে দেওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, এতিম বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তার সম্পদের কাছেও যেয়ো না সৎ উদ্দেশ্য ছাড়া। আর ওয়াদা পূর্ণ কর, ওয়াদা সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুরা বনি ইসরাইল: ৩৪)

ওএফএফ/এএসএম

Read Entire Article