বিরামহীন বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, জনজীবন বিপর্যস্ত

2 months ago 6

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা চার দিনের ভারি বর্ষণে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অবিরাম বৃষ্টিপাতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ক্ষেতখামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

গত শনিবার থেকে আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পর্যন্ত অবিরাম ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পায়রা লোহালিয়া নদীর জোয়ারের পানি যোগ হয়ে উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারগাছিয়া, পাংগাশিয়া ইউনিয়নের রাজগঞ্জ-চান্দখালী, বাঁশবুনিয়া, হাজিরহাট, আলগি, আংগারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর, জলিশা কদমতলা ও মুরাদিয়া ইউনিয়নের উত্তর মুরাদিয়া, সন্তোষদি, চরগরবদি, দক্ষিণ মুরাদিয়ার কলাগাছিয়া এবং লেবুখালী ইউনিয়নের লেবুখালী, আঠারগাছিয়া, কার্ত্তিকপাশাসহ বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল এলাকা তলিয়ে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে রয়েছে। বহু বাড়ির উঠানে পানি উঠে যাওয়ায় রান্না-বান্না, শিশুদের চলাফেরা এবং রোগীদের যাতায়াতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে পানি ঢুকে স্টাফ কোয়ার্টার, ডাকবাংলো, খেলার মাঠ ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। পায়রা, পাতাবুনিয়া ও মুরাদিয়া নদীর তীরবর্তী ওয়াপদা বেড়িবাঁধের বাইরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ৫-৬ ফুট উচ্চতার পানিতে ওইসব এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির পানিতে আমন বীজতলা ও সবজি ক্ষেত ডুবে গিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যাতায়াতে ভোগান্তির পাশাপাশি ছোটখাটো রোগবালাইও বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।

উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে পীরতলা খালটি খননের অভাবে এবং রাজনৈতিক প্রভাবে খালের জায়গা দখল হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে মৃতপ্রায় হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অচল হয়ে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠছে। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে দুর্বল ঘরের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Read Entire Article