ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেলেন সেই শামীমা বেগম

4 hours ago 6
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী শামীমা বেগম। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে শামীমা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে আবারও ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। বুধবার (১২ মার্চ) ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন ‘ইউকে হিউম্যান রাইটস ব্লগ’ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এন ৩ ও জেডএ বনাম যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (২০২৫) ইউকেএসসি-৬ মামলার শুনানির পর আদালত এই রায় দেন।  মূলত জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে শামীমা বেগমসহ আরও একজন ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল। তবে, আপিল বিভাগের দীর্ঘ শুনানির পর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের ফলে তাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পুরো সময়ের জন্য কার্যকর থাকবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ডাচ নাগরিক ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন এবং তিন সন্তানের জন্ম দেন, যাদের সবাই পরবর্তীতে মারা যায়। ২০১৯ সালে সিরিয়ার আল হোল শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকালে ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করে। এরপর তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ যুক্তি দিয়েছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। তবে, ব্রিটিশ সরকারের দাবি ছিল, শামীমার পিতৃসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকায় তাকে রাষ্ট্রহীন করা হয়নি। যদিও বাংলাদেশ সরকার তখনই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, শামীমা বেগমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেই এবং তিনি দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। শামীমার আইনজীবীরা ২০২৩ সালে তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আপিল করেন। কিন্তু ব্রিটিশ আপিল আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় আসে, যেখানে বলা হয়— শামীমা বেগম তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কখনো হারাননি এবং তিনি ব্রিটেনেরই নাগরিক। বর্তমানে শামীমা বেগম সিরিয়ার আল রোজ শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন। তার আইনজীবীরা দাবি করেছেন, শিবিরের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। খাদ্যসংকট, রোগব্যাধি ও অনিরাপত্তার কারণে সেখানে আটকে থাকা নারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শামীমার পরিবার ও সমর্থকরা তাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে এনে আইনানুগ বিচারের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই রায়ের ফলে এখন শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরার পথ খুলে গেলেও, ব্রিটিশ সরকার তাকে ফিরিয়ে নেওয়া বা নতুন করে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা সময়ই বলে দেবে।
Read Entire Article