ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ, ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তারা উপাচার্য ও প্রক্টরের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চরম ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন।
ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
- আরও পড়ুন
- সাম্য হত্যার পর নিরাপত্তা জোরদারে তৎপর ঢাবি
- সাম্য হত্যার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা
এসময় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘১৩ দিন হয়ে গেল, ভিসি কিছু জানে না’, ‘ছাত্রদলের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন উল্লেখ করে অবস্থান কর্মসূচিতে গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, সাম্য হত্যার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও আমরা এই হত্যা মামলার কোনো সুরাহা দেখতে পাচ্ছি না। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গত ৯ মাসে ক্যাম্পাসে তোফাজ্জল হত্যা, ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানো, ঝুলন্ত লাশসহ অনেক ঘটনা আমরা দেখতে পেয়েছি। কিন্তু এসব ঘটনায় অপরাধীদের কোনোরকম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় তিনি বর্তমান প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন।
এসময় নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, সাম্য হত্যার বিচার না হওয়া শুধু একজন ছাত্রনেতার প্রতি অবিচার নয়, বরং পুরো ছাত্রসমাজের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাই, ছুরিকাঘাত ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন নির্বিকার। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, অবিলম্বে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ চাই।
ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাপ্পি বলেন, এই প্রশাসন ক্ষমতায় বসার পর ক্যাম্পাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। রাজু ভাস্কর্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। অথচ প্রশাসন কোনো বিচার করেনি। এই প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ না করলে কীভাবে টেনে নামাতে হয় তা আমরা জানি।
গত ১৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন সাম্য। রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শাহরিয়ার আলম সাম্য ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এফ রহমান হলের আবাসিক এই ছাত্রের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত সাম্য এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিশন আজ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এফএআর/এমকেআর/এএসএম