ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আজ। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা।
ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত কিছু আচরণবিধি রয়েছে। সেগুলো ভোটের দিনের জন্য প্রযোজ্য। এসব আচরণবিধির মধ্যে রয়েছে- ভোটারদের আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে যানবাহন ব্যবহার না করা, ভোটারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়োগ ও ভোটদানে বাধা না দেওয়া, ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে জটলা তৈরি না করা এবং ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোটারদের স্লিপ বিতরণ না করা।
আচরণ বিধিমালায় ভোটের দিনে যত নিয়ম
ডাকসুর আচরণবিধির ৩(খ)-তে বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা কেন্দ্র হতে ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো ধরনের যানবাহন (মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি ইত্যাদি) ব্যবহার করা যাবে না।
নির্বাচনের দিন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে শুধু চিফ রিটার্নিং অফিসার অথবা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত যানবাহন নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে। তবে নির্বাচনের দিন প্রার্থী, ভোটার ও শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে বাইসাইকেল, রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।
- আরও পড়ুন
ডাকসুর ভোট আজ
বন্ধ থাকবে মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন
ভোটের দিন যেসব দায়িত্ব পালন করবেন পোলিং এজেন্টরা
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা ভোটারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়োগ ও ভোটদানে বাধা দিতে পারবেন না।
ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ রাখতে হবে। বুথের অভ্যন্তরে কোনোভাবেই এ ধরনের কোনো ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না বা কোনো ধরনের ছবি তোলা যাবে না।
ভোটদানের পর অবিলম্বে ভোটারদের কেন্দ্র ত্যাগ করতে হবে। ভোটদানের উদ্দেশ্যে ভোটের লাইন ছাড়া ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে জটলা তৈরি করা যাবে না এবং দীর্ঘ সময় উপস্থিত থাকতে পারবে না।
নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া ক্যাম্পাসে অন্য সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ভোটার নির্বাচনের দিন ভোটার স্লিপ দিতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ করা যাবে না।
আচরণবিধির এসব বিধিনিষেধ পরিপালন না করলে প্রার্থীকে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে বিধিমালায়। এতে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার অথবা রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য যে কোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
তফসিল অনুযায়ী— মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৮টি, হল সংসদে ১৩টি পদে। ভোটগণনা শেষে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ফল ঘোষণা করা হবে।
ডাকসুতে মোট ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন ভোটারের মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ছাত্র ২০ হাজার ৯১৫ জন। নির্বাচনে ২৮ পদের বিপরীতে লড়ছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ৪০৯ জন ও নারী প্রার্থী ৬২ জন।
কোন পদে কত প্রার্থী
সহ-সভাপতি (ভিপি) ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ১৭ জন।
কমনরুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক নয়জন।
ক্রীড়া সম্পাদক ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক ১১ জন, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক ১৫ জন। এছাড়া ১৩টি সদস্যপদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ২১৭ জন।
এএএইচ/এমএএইচ/