ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন চালকরা। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর থেকে চালকরা প্রায় কয়েক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করার আন্দোলন করেন। এতে আগারগাঁও থেকে মিরপুর-১০ নম্বর পর্যন্ত রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যদিও বিকেল ৪টার আগে রিকশাচালকরা চলে গেলেও তাদের আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট যানজটের রেশ এখনো রয়েছে ওই এলাকায়।
এ বিষয়ে ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনের জন্য ‘আগারগাঁও- মিরপুর-১০’ রুটে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। টিম ট্রাফিক মিরপুর বিভাগ ‘ডিসি ট্রাফিক মিরপুর’ স্যারের নির্দেশে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।
বিকেল ৪টায় ট্রাফিক-মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইয়াসিনা ফেরদৌস বলেন, আন্দোলনরত রিকশাচালকরা চলে গেছে। তবে তারা কয়েক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেছিল। ফলে পুরো এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, যার রেশ এখনো রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা কাজ করছি।
এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
প্যাডেলচালিত রিকশা সংগঠন ঢাকা মহানগর রিকসা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক রিট পিটিশনটি দায়ের করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু। বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশন প্যাডেল চালিত রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি জহুরুল ইসলাম মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক মো. মমিন আলী এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন।
বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ রিকশা চলাচল করছে রাজধানীতে। যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে।
রাজধানীর মূল সড়কের চেয়ে অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বেশি। সুযোগ পেলে মূল সড়কেও দাপিয়ে বেড়ায় এসব রিকশা। রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, ময়নারটেক, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি।
এসব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল রয়েছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।
টিটি/এমএএইচ/এমএস