যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবার পর গাজায় স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গঠিত এই বাহিনীকে পরিচালনা করতে মিশরকে নেতৃত্ব দেওয়া হতে পারে। মিশরের পাশাপাশি তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং আজারবাইজানকে মূল সৈন্যদাতা দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় নেতাদের সমর্থন রয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য মতে, প্রস্তাবিত বাহিনীকে হাইতিতে থাকা আন্তর্জাতিক সৈন্যদের মতো ক্ষমতা দেওয়া হবে, যা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে এ বাহিনী পূর্ণাঙ্গ শান্তিরক্ষা অভিযানের জন্য পাঠানো যাবে না বরং তা জাতিসংঘের ম্যান্ডেট অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এ নিরাপত্তা বাহিনী। এর দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হলো গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমকে অন্তর্ভুক্ত করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বাফার জোন বজায় রেখে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।
তবে সবচেয়ে বিতর্কিত অংশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হামাসের অস্ত্র জমা দেওয়া। হামাস অস্ত্র জমা না দিলে যুদ্ধ থামবে না বলে শনিবার (১৮ অক্টোবর হুশিইয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে বার্তা সংস্থা এএফপি কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ কোন ভাবেই সম্ভব না। এমন প্রশ্ন তোলাই অবান্তর।
এছাড়া বিতর্ক আছে টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে শান্তি বোর্ড গঠন নিয়ে। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস ঘোষণা দিয়েছেন, টনি ব্লেয়ারকে তারা বিশ্বাস করে না। তার নেতৃত্বে কোন বোর্ড গঠন মেনে নেওয়া হবে না।
গাজা পুনর্গঠনের জন্য ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের বেশি লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেসরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এ অর্থের যোগান দেবে। তবে কী ধরণের বেসকারী বিনিয়োগ হবে তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
সোমবার ( ১৩ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস, বিনিময়ে ইসরায়েল কারাগার থেকে প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ৯৩৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছেন।
কেএম