অফিসে যাওয়ার কথা বলে বাসা বেরিয়ে একদিন আগে নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। সেখানে আজ শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসবে পরিবার।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে বিভুরঞ্জন সরকারের ছেলে ঋত সরকার জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাবার মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে ময়নাতদন্তের পর ঢাকায় আনা হবে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন বিভুরঞ্জনের ছেলে ঋত সরকার ও ভাই চিররঞ্জন সরকার।
৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকায় জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন
- সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার
- মর্গে সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের মরদেহ শনাক্ত করেন তার ছেলে-ভাই
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বেরোনোর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে রাতেই রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবার।
পরদিন শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ পাঠান জাগো নিউজকে জানান, বিকেলে বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদীতে মরদেহটি ভাসছিল। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোনে করে তাদের জানান। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। সন্ধ্যার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
বাবার নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে ঋত সরকার বৃহস্পতিবার রাতেই রমনা থানায় জিডি করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হন বিভুরঞ্জন সরকার। বিকেল ৫টার মধ্যে তার বাসায় ফেরার কথা ছিল। তিনি মোবাইল ফোনটি বাসায় রেখে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
এরমধ্যে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ‘খোলা চিঠি’ শিরোনামে বিভুরঞ্জন সরকারের একটি লেখা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় চিঠিটি তিনি তাদের ই-মেইল করেছিলেন। ‘জীবনের শেষ লেখা হিসেবে এটা ছাপতে পারেন’ ফুটনোট দেওয়া ওই লেখায় বিভুরঞ্জন সরকার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নানা ঘটনা, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও গণমাধ্যম পরিস্থিতি, নিজের ও ছেলের অসুস্থতা, মেডিকেল পাস সরকারি কর্মকর্তা মেয়ের উচ্চতর পরীক্ষায় ‘ফেল করা’, বুয়েট থেকে পাস করা ছেলের ‘চাকরি না হওয়া’ এবং নিজের আর্থিক দৈন্য নিয়ে হতাশার কথা উল্লেখ করেন।
টিটি/এমকেআর/এমএস