‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

3 weeks ago 21

বসন্তের স্নিগ্ধতা আর ভালোবাসা দিবসে সম্পর্কের উজ্জ্বলতার প্রকাশ যেন ব্যস্ততম রাজধানীর রমনা পার্কে। যেন ফাগুন আর ভালোবাসায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই। রংবেরঙের পোশাকের ফাঁকেও ভালোবাসার লাল আর ফাগুনের বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক।

বিশেষ এ দিনে প্রিয় মানুষটির হাত ধরে হেঁটে চলা, পরিবার নিয়ে ঘুরে ফিরে ক্যামেরা বন্দি হওয়া, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা বা লেকে নৌকায় ভেসে বেড়ানো কি নেই এখানে। লোক সমাগমে চোখ জুড়ানো আর মনোমুগ্ধকর অপরূপ সাজেই সেজে বিশেষ এ দিনটির প্রকাশ মিলছে রমনা পার্কে।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত রমনা পার্কে এমন চিত্র দেখা যায়।

দেখা যায়, রংবেরঙের পোশাকে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত রমনা পার্ক। ছোট-বড় সব শ্রেণির মানুষ ঘুরতে এসেছেন এখানে। কেউবা এসেছেন পরিবার নিয়ে, কেউবা ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে। কেউ আবার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

বন্ধুরা বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেউ কেউ নৌকায় ভেসে বেড়াচ্ছেন লেকে। কেউবা আবার গাছের নিচে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। আবার প্রিয়জনদের সঙ্গে ছবি তুলতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে। দৌড়াদৌড়ি করে খেলা করতে দেখা গেছে শিশুদের। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আনসার বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতেও দেখা গেছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল হোসেন পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর মহাখালীতে। স্ত্রী ও শিশু মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন পার্কে। খোলামেলা স্থান পেয়ে খেলা করে বেড়াচ্ছে শিশুটিও।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

জুয়েল বলেন, চাকরির কারণে ইচ্ছা থাকলেও পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরোনোর সুযোগ হয় না। শিশুদের ছোট থেকেই মাঝেমধ্যে বাইরের খোলামেলা পরিবেশে ঘোরানো উচিত। তাই সবসময় সুযোগ না হলেও এই সময়টায় সেই সুযোগ হাতছাড়া করিনি। স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। এখান থেকে বইমেলা ঘুরে বাসায় যাবো।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন মশিউর রহমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় অধিকাংশ সময় পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া হয় না। আজকে ছুটি আর উৎসবের দিন হওয়ায় সপরিবারে বের হয়েছি। বইমেলায় এসেছিলাম। পাশাপাশি হওয়ায় পরিবার নিয়ে রমনা পার্কেও ঘুরে গেলাম।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, আমরা সবাই পড়াশোনা করি। একসঙ্গে ঘুরতে বের হওয়ার সুযোগ হয় না। কারণ প্রাইভেট কোচিং কলেজ বিভিন্ন চাপ থাকে। একজন ফ্রি থাকলে দেখা যায় অন্যরা ব্যস্ত। আজ সবাই ফ্রি। এ জন্য সবাই মিলে ঘুরতে এসেছি।

এদিকে গত বছরগুলোর তুলনায় এবার মানুষের উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছেন ফুল বিক্রেতারা। ফলে বেচা-বিক্রিও কম বলে অভিযোগ তাদের। আর এ মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় হিসেবে টানা দুইদিনের ছুটিতে অনেকেই ঢাকার বাইরে ঘুরতে গেছেন বলে মনে করছেন তারা।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

ফুল বিক্রেতা জয়েন শুভ বলেন, প্রতিবছর যে পরিমাণ মানুষের সমাগম হয়, যে পরিমাণে ফুর বিক্রি হয় এবার তার থেকে অনেকটায় কম। কারণ সরকারি ছুটি টানা দুইদিন হওয়ায় অনেকেই ঢাকার বাইরে চলে গেছেন। এজন্য অন্যবারের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি কিছুটা কম।

অন্য এক ফুল বিক্রেতা বলেন, এবার বেচাকেনা আগের তুলনায় অনেকটাই কম। গত বছর যে জমজমাট ছিল এবার সেই তুলনায় মানুষের উপস্থিতি কম।

‘লাল-বাসন্তী পোশাকে রঙিন রমনা পার্ক’

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার বাহিনীর সহকারী প্লাটুন কমান্ডার শাহানুর বলেন, রমনা পার্কে রাতদিন মিলিয়ে তিনটি শিফটে ৩৫ জন দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ১১ জন রমনা পার্কের বর্তমানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছেন।

কেআর/এমএএইচ/এএসএম

Read Entire Article