লোকচক্ষুর আড়ালেই চিরবিদায় চুয়াডাঙ্গার সাবেক এমপি ছেলুনের

2 months ago 24

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আর নেই। শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন ছেলুন জোয়ার্দ্দার। সম্প্রতি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্ট থেকে সরিয়ে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস।

জানা গেছে, ১৯৪৬ সালের ১৫ মার্চ চুয়াডাঙ্গা শহরের আরামপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। তার বাবা সিরাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার এবং মা আছিয়া খাতুন। ছাত্রজীবনে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। চুয়াডাঙ্গা মহকুমা ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করে পরবর্তীতে যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন এবং পরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মেঘালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন ছেলুন জোয়ার্দ্দার। শুধু রাজনীতি নয়, সমাজসেবা ও ক্রীড়াক্ষেত্রেও তিনি রেখেছেন অবদান। চুয়াডাঙ্গা রাইফেল ক্লাব, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন বহু বছর।

তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান এবং এমপি হন তিনি। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ‘রাতের ভোটের’ কারণে সমালোচিত হন তিনি। তবে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তাকে চুয়াডাঙ্গায় প্রকাশ্যে দেখা যায়। এরপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে উঠলে তিনি ঢাকায় চলে যান এবং আর ফিরে আসেননি।

একসময় যে মানুষটি চুয়াডাঙ্গার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন, সেই মানুষটিকে এবার বিদায় জানাতে প্রস্তুত তারই প্রতিষ্ঠিত ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা শহরের জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানে দাফন করা হবে।

হুসাইন মালিক/এফএ/এমএস

Read Entire Article