সবসময় ক্লান্ত লাগে? সহজ সমাধান বিট কেভাস
আপনি কি প্রায়ই ক্লান্ত বোধ করেন? অথবা হজমে গড়বড়, ত্বক ফ্যাকাসে, ইমিউনিটিও যেন দিন দিন কমে যাচ্ছে? অনেক সময় এসব সমস্যার পেছনে থাকে একটা সাধারণ কারণ—পেটের ভেতরের স্বাস্থ্য, বা গাট হেলথ।
গাট ঠিক না থাকলে শরীরের নানা কিছুতেই প্রভাব পড়ে। তবে চিন্তার কিছু নেই—এই এক সমস্যার সহজ একটা সমাধান হতে পারে বিট কেভাস, একটি প্রাকৃতিক, ফারমেন্টেড ও প্রোবায়োটিক পানীয়।
আরও পড়ুন : নিয়মিত বেদানা খাওয়ার ৭ দারুণ উপকারিতা জানালেন পুষ্টিবিদ
আরও পড়ুন : কোলেস্টেরল কমাতে পুষ্টিবিদের সহজ পরামর্শ
চলুন জেনে নেই এই পানীয়টি কী, কেন খাবেন আর কীভাবে ঘরেই বানিয়ে ফেলতে পারেন।
বিট কেভাস কী?
কেভাস হলো এক ধরনের প্রোবায়োটিক ড্রিংক, যা তৈরি হয় ফারমেন্ট করা বিটরুট দিয়ে। এতে ব্যবহার হয় শুধু বিটরুট, পানি আর একটু লবণ— কিছুদিন রেখে দিলে এটি নিজে থেকেই ফারমেন্ট হয়ে যায়।
এই পানীয়টির জন্ম পূর্ব ইউরোপে। যদিও আমাদের দেশে এখনো তেমন পরিচিত নয়, কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় এটি অনেকেই পান করেন নিয়মিত—শরীর ভালো রাখতে, ত্বক ঝলমলে রাখতে আর গাট হেলথ ঠিক রাখতে।
কেন খাবেন বিট কেভাস?
গাট হেলথ ঠিক রাখে : এতে থাকা প্রোবায়োটিকস হজমশক্তি বাড়ায় ও পেটের সমস্যা কমায়।
ইমিউনিটি বাড়ায় : বিটরুটে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় : নিয়মিত খেলে শরীরের ভেতরের টক্সিন বেরিয়ে যায়, ফলে ত্বক হয়ে ওঠে ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যবান।
ক্লান্তি দূর করে, শক্তি বাড়ায় : বিটরুটে থাকা নাইট্রেট রক্ত চলাচল বাড়িয়ে আপনাকে দেয় বাড়তি এনার্জি।
হার্টের জন্য ভালো : এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ও হার্টের কার্যকারিতা বাড়ায়।
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি : শরীরে ফোলাভাব বা প্রদাহ কমাতে দারুণ কার্যকর।
কীভাবে বানাবেন বিট কেভাস?
যা লাগবে
- ২-৩টি বিটরুট
- পরিষ্কার কাচের জার
- পানি
- স্বাদমতো লবণ (আর চাইলে একটু আদা)
প্রস্তুত প্রণালি
বিটরুটগুলো ভালো করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। কাচের জারে বিটরুট দিন, তারপর উপরের দিক পর্যন্ত পানি দিন। সামান্য লবণ ও চাইলে একটুখানি আদা দিন।
এবার জারটি ঢেকে ৩-৪ দিন রেখে দিন রুম টেম্পারেচারে (রোদে নয়)। ফারমেন্ট হয়ে গেলে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে প্রতিদিন পান করুন।
কখন খাবেন?
প্রতিদিন যে কোনো খাবারের আগে এক কাপ করে খেলেই যথেষ্ট। এক মাস নিয়ম করে খেলেই আপনি টের পাবেন শরীর ও ত্বকে পজিটিভ পরিবর্তন।
একটা গুরুত্বপূর্ণ টিপ
যাদের কিডনি সমস্যা আছে, তাদের জন্য বিট কেভাস উপযুক্ত নাও হতে পারে। তাই যে কোনো নিয়মিত পানীয় শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন : তরমুজের বীজ খাওয়া কি নিরাপদ?
আরও পড়ুন : গরম খাবারে লেবু দিয়ে খাচ্ছেন? জেনে নিন ফলাফল
এক গ্লাস বিট কেভাস প্রতিদিন, আর বদলে যেতে পারে আপনার শরীর ও ত্বকের গল্প। এটা শুধু একটি পানীয় নয়—একটা সহজ, প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যবান জীবনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পথ।
ঘরেই বানান, নিয়ম করে খান আর নিজের শরীরকে দিন ভেতর থেকে ভালো রাখার যত্ন।
সূত্র : ফিস্টিং এট হোম