সাবিনা ইয়াসমীনের গান আর গৌরবে রঙিন এক সন্ধ্যা

16 hours ago 3

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন পেলেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা। প্রায় ছয় দশকের সংগীতজীবন শেষে তিনি যেন নতুন এক আবেগে সিক্ত করলেন দর্শক-শ্রোতাদের। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় তার একক সংগীতানুষ্ঠান ও সংবর্ধনা। এটি আয়োজিত হয় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রয়াত লেখক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দেখানো হয় সাবিনা ইয়াসমীনকে নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র। সেখানে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তার সহকর্মী ও অনুজ শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল সাবিনা ইয়াসমীনকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিল্পীর হাতে ক্রেস্ট ও উত্তরীয় তুলে দেন। তিনি বলেন, ‌‘আজকে যাকে সম্মাননা দিচ্ছি তিনি আমাদের কিংবদন্তি, সত্যিকারের গৌরব।’

এই সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, এবং শিল্পকলা একাডেমির সচিব। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আফজাল হোসেন।

এ ছাড়া ‘মহানায়ক বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৫’ প্রদান করেন বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ ও কন্যা ঐন্দ্রিলা আহমেদ।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে সাবিনা ইয়াসমীন একে একে গেয়ে শোনান দশটি জনপ্রিয় গান। এর মধ্যে ছিল ‘সুন্দর সুবর্ণ’, ‘আমি রজনীগন্ধা’, ‘শত জনমের স্বপ্ন’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’। তার শেষ গান ছিল ‘সে যে কেন এল না’। এতে সাবিনার সঙ্গে গলা মেলান খুরশীদ আলম, রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানা, ফেরদৌস আরা, পার্থ বড়ুয়া, নকীব খান ও আগুন।

সাবিনা ইয়াসমীন নিজেই জানান, আজও অনুষ্ঠান থাকলে মহড়ায় বসেন নিয়মিত। গত সপ্তাহেও তিনি ১৬ জন যন্ত্রীর সঙ্গে মহড়া করেন শিল্পকলা একাডেমির মহড়াকক্ষে। তার নিষ্ঠা, একাগ্রতা আর কণ্ঠের প্রাণশক্তি মুগ্ধ করেছে সবাইকে।

১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই শিল্পী মাত্র ছয় বছর বয়সে পুরস্কার জেতেন অল পাকিস্তান স্কুল মিউজিক কম্পিটিশনে। ১৯৬২ সালে সংগীতে আনুষ্ঠানিক প্রবেশ। তারপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি রেকর্ড করেছেন ১৬ হাজারের বেশি গান, জিতেছেন ১৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৪) এবং স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬)।

সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরীর পরিচালনায় ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে গান গাওয়ার পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও অভিষেক ঘটে তার।

এলআইএ/জিকেএস

Read Entire Article