সাবেক আইজিপি ক্ষমা পাবেন কি, যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দিতে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, আন্দোলন দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার ঘটনায় আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমা প্রার্থী।
তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, তিনি ক্ষমা পাবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত আদালত নেবে। এখানে প্রসিকিউশনের কোনো ভূমিকা নেই।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানি শেষে আদালতের চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন নিজের বিবেকের তাড়নায় অপরাধ স্বীকার করেছেন। এমনকি নিজের পক্ষ থেকে রাজসাক্ষী হওয়ারও আবেদন করেছিলেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তার ব্যাপারে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা নির্ধারিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সাবেক আইজিপি যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিশ্বের কোনো আদালতেই এ সাক্ষ্যকে দুর্বল প্রমাণ করার সুযোগ নেই। এটি একটি অকাট্য অপ্রতিরোধ্য সাক্ষ্য। এটি শুধু জুলাই আগস্টের ঘটনা নয়, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যত গুম খুন হয়েছে তার বিরুদ্ধে একটি অকাট্য দলিল হিসেবেও কাজ করবে।
প্রসঙ্গত, ফৌজদারি অপরাধের বিচার হয় ফৌজদারি কার্যবিধি, দণ্ডবিধিসহ অন্যান্য ফৌজদারি বিধান অনুযায়ী। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ধারার বর্ণনা অনুসারে ‘রাজসাক্ষী’ বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝায়, যিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, কিন্তু ক্ষমা পাওয়ার শর্তে অপরাধের সমগ্র ঘটনা, মূল অপরাধী ও সহায়তাকারী হিসেবে জড়িত সব অপরাধীর সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ঘটনা প্রকাশ করে আদালতে সাক্ষ্য দেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ধারার ভাষ্য হলো, কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট অপরাধ তদন্ত, অনুসন্ধান বা বিচারের যেকোনো পর্যায়ে অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বা সে সম্পর্কে সাক্ষ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তিকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করার প্রস্তাব দিতে পারেন। শর্ত হলো, তার জানামতে অপরাধসম্পর্কিত সামগ্রিক অবস্থা ও অপরাধ সংঘটনের ব্যাপারে মূল অপরাধী বা সহায়তাকারী হিসেবে জড়িত প্রত্যেকের সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সত্য ঘটনা প্রকাশ করলেই তাকে ক্ষমা করা হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, কোনো রাজসাক্ষী যদি নিজের অপরাধ ও অন্য অপরাধীদের ব্যাপারে সত্য গোপন করেন কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেন, তখন তিনি রাজসাক্ষী থেকে আবার আসামি হয়ে যান।