নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগ। ২৩টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ফুডির পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজন করা হয়েছে ‘ফুডি লিট কার্নিভাল’ নামের এই উৎসব।
উৎসবে ছিল নানা রকম চমকপ্রদ সেগমেন্ট, যেমন- স্পট পোয়েট্রি ও আবৃত্তি, কমিক-কন ও কসপ্লে, পোস্টার প্রেজেন্টেশন, নাটক ও মাস্কারেড। প্রতিটি আয়োজনই সাহিত্যচর্চা, সৃজনশীলতা ও শিল্পগত সহযোগিতাকে উৎসাহিত করার উদ্দেশে সাজানো হয়। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ছিল সাহিত্যমনস্ক ফুড কোর্ট, পুরনো বই বিনিময়ের আয়োজন এবং নানা রকম স্টল, যা দিনভর শিক্ষার্থী ও অতিথিদের ব্যাপক আকর্ষণ করে। এক কথায় ‘ফুডি লিট কার্নিভাল’ সাহিত্য ও তারুণ্যের মেলবন্ধনে রুপ নেয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) নগরীরর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ‘ফুডি লিট কার্নিভাল’ অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি ঘটে এক জমকালো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণকারী এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীরা এই দিনব্যাপী সাহিত্য ও সংস্কৃতির উৎসবে যোগ দেন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। তারা প্রেরণাদায়ক বক্তৃতায় সাহিত্য ও সৃজনশীলতা সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি তুলে ধরেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি চত্বরে স্টলগুলোর উদ্বোধন করেন। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক শামস রহমান সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। তারুণ্যের মাঝে তিনি হারিয়ে যান এবং ৪০ বছর আগের সময়ের স্মৃতিচারণ করেন। পাশাপাশি এমন একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন।
অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহান এবং সিনিয়র লেকচারার শাহনাজ আমীর।
দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল স্পট পোয়েট্রি প্রতিযোগিতা, যা মূল্যায়ন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মুনিজে মানজুর এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা ড. ফকরুল আলম। এই আয়োজন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাহিত্যিক ঐতিহ্য রক্ষায় অবিচল প্রতিশ্রুতি এবং যান্ত্রিকতার বেড়ে ওঠার যুগে সাহিত্যের পাঠ ও অনুরাগকে নতুনভাবে উদ্দীপিত করার প্রয়াসকে তুলে ধরে। এটি প্রমাণ করে যে নতুন প্রজন্ম কীভাবে কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে সাহিত্যের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুনর্গঠন করছে।
এমন উদ্যোগের বিষয়ে ফুডির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ মান্নান জানান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ফুডি লিট কার্নিভাল তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতা, প্রাণচাঞ্চল্য ও সাংস্কৃতিক ভাবনার এক অনন্য প্রকাশ। ফুডি সব সময় বিশ্বাস করে-খাবার শুধু স্বাদের নয়, এটি মানুষের সম্পর্ক, গল্প ও অনুভূতির একটি সেতুবন্ধন। এমন একটি আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আমরা আনন্দিত, যেখানে সাহিত্য ও খাবার এক সঙ্গে সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। ভবিষ্যতেও ফুডি তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা, ইতিবাচক উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক বিকাশে পাশে থাকতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে ফুডি বুথ অ্যাক্টিভিটি, ফ্রি ক্যারেক্টার গেমস (ডার্ট অ্যান্ড রিং টোস), অ্যামিউজিং গিফটসহ এক্সক্লুসিভ ফুডি অফারের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ২৩টি, কলেজ, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়। অংশ নেওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আইইউবিএটি (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি), ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, শান্ত মারিয়াম ইনস্টিটিউট অব ক্রিয়েটিভ টেকনলজি, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি, নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি, লিবারেল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয় এবং খিলগাঁও মডেল কলেজ।
অনুষ্ঠানে আয়োজিত নাটকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন শান্ত মারিয়াম ইনস্টিটিউট অব ক্রিয়েটিভ টেকনলজির নুসরাত জাহান নওরিন। পোস্টার প্রেজেন্টেশনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সাদিয়া আক্তার ও নাজিফা বিনতে নাইম।
অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী দেশি প্ল্যাটফর্ম ‘ফুডি’র যাত্রা শুরু হয়। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ফুডি, দেশে রাইডারভিত্তিক ফুড ডেলিভারি সেবায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
শতভাগ দেশি উদ্যোক্তার উদ্যোগে ফুডির আত্মপ্রকাশ। স্বল্প সময়ে ফুড ডেলিভারি, তুলনামূলক কম খরচে রুচিশীল খাদ্যপণ্য প্রতিনিয়ত সরবরাহ করে যাচ্ছেন ফুডির একঝাঁক শিক্ষিত তরুণ রাইডার।
ফুডি রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সব জেলা শহরে ধারাবাহিকভাবে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এমওএস/এএমএ/এমএস