দীর্ঘ ১৯ বছর পর আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে যাচ্ছে বগুড়াবাসী। ২০০৬ সালের পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ফিরছে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবে এবার জাতীয় দল নয়, মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের অনূর্ধ্ব–১৯ দল।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মমিনুর রশিদ শাইন জানান, আগামী ২৮ ও ৩১ অক্টোবর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে দুই দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ। দর্শকদের জন্য সুখবর— এই ম্যাচগুলো দেখতে কোনো টিকিট লাগবে না, অর্থাৎ গ্যালারিতে বসে ফ্রি খেলা উপভোগ করতে পারবেন তারা।
২০০৬ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি এই মাঠে। মাঝে মাঝে এনসিএল, যুব বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ক্যাম্প কিংবা বাংলা টাইগার্সের অনুশীলন হলেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পায়নি বগুড়া। ফলে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জমেছিল ক্ষোভ ও আক্ষেপ। এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে।
আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব–১৯ দল পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ২০ অক্টোবর ঢাকা আসবে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। একই দিন বগুড়া পৌঁছে যাবে তারা। ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হবে দুই দলের অনুশীলন। প্রথম দুটি ওয়ানডে হবে বগুড়ায়, বাকি তিনটি অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে।
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে সর্বশেষ বড় আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ২০০৬ সালে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। যখন মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা ও চামিন্দা ভাসদের মতো তারকারা খেলতে এসেছিলেন। তারও আগে ২০০৪ সালে এখানে খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর ও এলটন চিগুম্বুরা। দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটিং উইকেট হিসেবেই খ্যাত এই মাঠটি এত বছর অবহেলায় পড়েছিল।
সম্প্রতি আরডিএ মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিসিবির নবনির্বাচিত পরিচালক মোখছেদুল কামাল বাবু বলেন, ‘ক্রিকেট আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। বগুড়ার মানুষ হিসেবে আমার প্রথম প্রাধান্য হবে শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম সংস্কার করা এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়ে আসা। তবে এজন্য বিমানবন্দর, হোটেল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি বগুড়ায় বিমানবন্দর চালু থাকত, তাহলে এবারের বিপিএলের তিন থেকে চারটি ম্যাচও এখানে আয়োজন করা যেত। তবু আমরা আনন্দিত, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পাঁচ ম্যাচের সিরিজের দুইটি বগুড়ায় হচ্ছে— এটাই বড় শুরু।’
দীর্ঘ ১৯ বছরের অপেক্ষার পর এই আয়োজনকে ঘিরে বগুড়ার ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহের কমতি নেই। তাদের প্রত্যাশা— এই আলোর রেখা যেন আর নিভে না যায়। এবার যদি মাঠভরা দর্শক উপস্থিত হয়, তাহলে হয়তো জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচও খুব শিগগিরই ফিরবে চান্দু স্টেডিয়ামে।
এল.বি/আইএইচএস/