নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের নিজগ্রাম পিজাহাতীর পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত হলেন ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ (৪০)। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এরআগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) টঙ্গীতে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ হন শামীম আহমেদ। পরে তাকে সহকর্মীরা উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মারা যান।
বুধবার ভোরবেলা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় শামীমের মরদেহ। এসময় পরিবারের লোকজনের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পিজাহাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে পৌনে ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। জানাজার আগে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদারের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
জানাজায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পূর্ণ চন্দ্র, নেত্রকোনা জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া দুলালসহ নিহত ফায়ার ফাইটার শামীমের পরিবার, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী অংশ নেন।
আরও পড়ুন
শতভাগ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদাও চলে গেলেন
জানাজাপূর্ব আলোচনায় নিহত ফায়ার ফাইটার শামীমকে অশ্রুসিক্ত বিদায় জানানো হয়। এসময় বক্তারা জানান, শামীম ছোটবেলা থেকেই একজন পরোপকারী মানুষ ছিলেন।
কৃষক পরিবারে জন্ম ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদের। তার বাবা মৃত আব্দুল হামিদ। মা রাজ বানু (৯০)। বৃদ্ধ মা বেঁচে আছেন। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম সবার ছোট। অন্য ভাইয়েরা সবাই কৃষক। এক ভাই মারা গেছেন। একমাত্র শামীমই এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ২০০০ সালে এসএসসি উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০০৪ সালে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন শামীম।
২০১০ সালে একই উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামের সবুজ মিয়ার মেয়ে মনিরা আক্তারকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন শামীম। এরইমধ্যে জন্ম দেন এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কর্মস্থল টঙ্গীর ফায়ার সার্ভিসের কোয়ার্টারেই বসবাস করতেন তিনি। ছেলে নাবিল মাদরাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ে হুমায়রা আক্তারও মাদরাসার শিক্ষার্থী। আর ছোট মেয়ে ওহী আক্তার এখন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়নি।
এইচ এম কামাল/এসআর/জিকেএস