কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

2 hours ago 5

ঝলমলে আলো, গ্ল্যামারের মোহ আর নিরন্তর দৌড়ের ভেতরেও তিনি যেন সবসময় একটু আলাদা। দীপিকা পাডুকোন কেবল পর্দার চরিত্রেই নয়, বাস্তব জীবনেও বারবার দেখিয়েছেন-সাফল্য মানে শুধু কাজ নয়, নিজের প্রতি যত্নও। সম্প্রতি তার এক বক্তব্যে বলিউডে তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়, ‘প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি কাজ করা উচিত নয়।’

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

গ্ল্যামার জগতের এই সোজাসাপ্টা মন্তব্যে যেন উঠে এসেছে এক গভীর সত্য: ক্লান্ত শরীর বা অবসন্ন মন নিয়ে সাফল্য কখনও পূর্ণ হয় না। দীপিকার ভাষায়, প্রকৃত সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে জীবনের ভারসাম্যে-যেখানে কাজ, বিশ্রাম আর মানসিক প্রশান্তি সমানভাবে জায়গা পায়।

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

বলিউডে প্রতিযোগিতা মানেই নিরন্তর দৌড়। শুটিং সেটে কখনও ভোরে শুরু হয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। কিন্তু দীপিকা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন-শরীরের সীমা অতিক্রম করলে কাজের মানও নষ্ট হয়, মনও ভেঙে পড়ে। তার মতে, ‘কাজে দক্ষতা মানে দীর্ঘ সময় নয়, বরং মনোযোগ ও যত্ন।’ এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু চলচ্চিত্র নয়, অফিসের ডেস্কে বসে থাকা সাধারণ কর্মজীবী মানুষের জন্যও এক সতর্কবার্তা।

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

দীপিকার জীবন সহজ ছিল না। মডেলিং থেকে সিনেমায় আসা, একের পর এক সাফল্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন নিজের হতাশা ও মানসিক অস্থিরতার সঙ্গে। প্রকাশ্যে ডিপ্রেশনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেছিলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও কাজের মতোই জরুরি।’ তার এ বক্তব্য তখন অনেকের চোখ খুলে দিয়েছিল। আর এবার ‘৮ ঘণ্টার কাজই যথেষ্ট’-এই মন্তব্য যেন আবারও মনে করিয়ে দিল, মানুষ যত বড় তারকাই হোক, নিজের সীমার বাইরে যাওয়া মানে নিজের প্রতি অন্যায় করা।

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

দীপিকা আজ শুধু অভিনেত্রী নন, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার এক কণ্ঠস্বর। তার প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ‘লাইভ লাভ লাফ’ বছরের পর বছর ধরে মানুষকে শেখাচ্ছে, সুস্থতা মানে শুধু শরীর নয়, মনও। তার এই নতুন মন্তব্য যেন সেই ভাবনারই সম্প্রসারণ-যেখানে কাজ, বিশ্রাম ও নিজের সময়-তিনটি বিষয় একসঙ্গে মিলে তৈরি করে প্রকৃত সুস্থ জীবন।

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

দীপিকার কথা হয়তো অনেকের কাছে বিলাসী শোনায়। কারণ সবাই তো আট ঘণ্টায় কাজ শেষ করতে পারেন না! কিন্তু এই মন্তব্য আসলে সেই সীমা মনে করিয়ে দেয় যেখানে পৌঁছে মানুষ আর মানুষ থাকে না, হয়ে যায় কেবল যান্ত্রিক শ্রমিক। দীপিকার এই অবস্থান আমাদের শেখায়, পরিশ্রম হোক মাপজোখে আর জীবনের আনন্দ থাকুক প্রতিদিনের ছোট্ট বিরতিগুলোতে।

কর্মজীবনের অদৃশ্য চাপ, ভারসাম্যই আসল সৌন্দর্য

দীপিকা পাডুকোনের বক্তব্য হয়তো বলিউডের চাকচিক্যের আড়ালে এক ক্ষুদ্র উচ্চারণ, কিন্তু এর প্রতিধ্বনি শোনা যায় প্রতিটি কর্মজীবী নারীর মনের ভেতর। কারণ কাজের চাপে যে ক্লান্তি, তা শুধু অভিনেত্রীর নয়-প্রতিটি মানুষের বাস্তবতা। তিনি যেন মনে করিয়ে দিলেন সাফল্য তখনই অর্থবহ, যখন তার পেছনে থাকে মানসিক শান্তি ও নিজের প্রতি মমতা।

জেএস/

Read Entire Article