গাজা পরিস্থিতির দায় আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে ব্লিঙ্কেনকে

5 days ago 11

গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক হামলা এবং এ কাজে যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থন বিদায়ী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন কূটনীতিক হালা রারিত।

রারিত, যিনি গত বছর এপ্রিলে গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নির্যাতন ও নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের আইন উপেক্ষা করে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন ও অস্ত্র সরবরাহ 

হালা রারিত যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কাছে অস্ত্র হস্তান্তর নিষিদ্ধ করার জন্য বেশ কয়েকটি মার্কিন আইন রয়েছে। এর মধ্যে দ্য লেহি আইন উল্লেখযোগ্য। 

এই আইন অনুযায়ী, যেসব সামরিক ইউনিট বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ নিষিদ্ধ।

তবে, বাইডেন প্রশাসন এসব আইনকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ উপেক্ষা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রারিতের মতে, তারা জানত এটি কতটা বিপর্যয়কর হবে। তবুও তারা আইনের প্রক্রিয়া ফাঁকি দিয়ে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে গেছে।

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের ভয়াবহতা 

১৫ মাস ধরে চলমান গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৮৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে, যা কয়েক লাখ মানুষের জন্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মার্কিন কংগ্রেসে গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলের বাধা নেই বলে দাবি করলেও, মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো এ মূল্যায়ন নাকচ করে দেয়।

ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের ক্ষোভ 

ব্লিঙ্কেনের ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা তাকে বারবার ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের তীব্র সমালোচনা ও বিক্ষোভের মুখে ফেলেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে আটলান্টিক কাউন্সিলে বক্তৃতাকালে তাকে ‘গণহত্যার পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ বলে অভিহিত করে বিক্ষোভ হয়।

বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শেষ সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন ব্লিঙ্কেন। গাজায় ইসরায়েলের হামলার সমর্থন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে, নিরাপত্তাকর্মীদের বাধ্য হয়ে দুই সাংবাদিককে বের করে দিতে হয়।

গাজায় ইসরায়েলের প্রতি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সমর্থনের এ কালো অধ্যায় ইতিহাসে তার বিরুদ্ধে কঠোর রায় দেবে। এটা তাকে তার বাকি জীবন তাড়িয়ে বেড়াবে, বলেন রারিত।

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ হলেও গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Read Entire Article