গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত, সহজ ও সাশ্রয়ী ন্যায়বিচার নিশ্চিতে গ্রামীণ আদালতকে আরও কার্যকর, শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার ওপর জোর দিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন, নারী নেতৃত্ব ও প্রান্তিক জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে সঠিক সমন্বয়, সচেতনতা বৃদ্ধি ও সব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা জরুরি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘গ্রামীণ নারী ও প্রান্তিক জনগণের জন্য জেন্ডার-সংবেদনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গ্রামীণ আদালত সেবার গুরুত্ব’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় পরিচালিত “গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্প” এ বৈঠকের আয়োজন করে।
বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মুমতাজ আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী, ইউএনডিপির সিনিয়র গর্ভানেন্স বিশেষজ্ঞ তানভীর মাহমুদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উন্নয়ন সংস্থা, একাডেমিয়া ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। বৈঠকের সঞ্চালনায় ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় প্রকল্প পরিচালক সুরাইয়া আক্তার জাহান।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জাহেদী বলেন, ‘গ্রাম আদালতকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে হলে নারীর অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা জরুরি। প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম, স্থানীয় সরকার ও সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।’
প্রকল্পের জেন্ডার এনালিস্ট শামীমা আক্তার শাম্মী বলেন, কাঠামোগত ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে গ্রামীণ নারীরা এবং প্রান্তিক জনগণ প্রায়ই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন।
ফেব্রুয়ারি ২০২৪ থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত গ্রামীণ আদালতে মোট ১,৩৬,৮০৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬,৯৬২টি নারী আবেদনকারীর মামলা। এ সময়ে উচ্চ আদালত থেকে ১৪,২১৪টি মামলা রেফার করা হয়েছে।
প্রধান অতিথি মুমতাজ আহমেদ বলেন, ‘নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রকল্পে গ্রাম আদালত সম্পর্কিত সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করা গেলে গণসচেতনতায় ভালো ফলাফল আশা করা যায়। বিচারকার্যে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।’
বর্তমানে দেশের ৬১টি জেলায় ৪৪৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অন্য বক্তারা বলেন, দ্রুত, সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি গ্রামীণ আদালতগুলোকে নারী ও প্রান্তিক জনগণের জন্য সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক ন্যায়বিচারের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
জেপিআই/এসএনআর/জিকেএস