বিভাজন নয়, ঐক্যের রাজনীতি করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক সদস্য বিএনপিতে যোগদানের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে কথাটা আমরা বলি সেটা হচ্ছে, শতফুল ফুটবে। সেই শতফুল থেকে একটা স্লোগান বেরিয়ে আসবে—সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ। অনেক ভুল-বুঝাবুঝি হয়েছে, অনেক রক্তপাত হয়েছে, অনেক বিভাজন হয়েছে। আমরা এখন এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনৈতিক কাঠামো সবকিছু ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আগেই বলেছেন- ‘প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা চাই না, ভালোবাসার মধ্য দিয়ে মানুষকে জয় করে ঐক্যের রাজনীতি সৃষ্টি করতে চাই’।
তিনি বলেন, আজকে অনেকে অনেক কথা বলবে, স্বার্থের কথা বলবে এবং বলছেও। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কথা বলছি। এখন আমাদের দর কষাকষি করছি, এখন আমাদের স্বার্থগুলো সামনে এসে গেছে। কোনটাকে মেনে নেবো, কোনটাকে মেনে নেবো না, তাই না।
‘কেউ বলছে পিআর করতে হবে, কেউ বলছে পিআর করা যাবে না। আমরা সেসব পথে যেতে চাই না। ১৯৭১ সালে যে বাংলাদেশ আমরা তৈরি করেছিলাম, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই।’
এদিন গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সোমনাথ দে, কপিল কৃষ্ণ মন্ডল, সমেন সাহার নেতৃত্বে গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত অর্ধশতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য বিএনপি মহাসচিবের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিকে যোগ দেন।
নতুন যোগদানকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা আমাদের মধ্যে আরও বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলি। কিছু মানুষ আমাদের ঐক্যে ভাঙন ধরাতে চায়।
তিনি বলেন, আজকের সময়টা অনেক কঠিন। কিছু মানুষ আমাদের ঐক্যে ভাঙন ধরাতে চেষ্টা করছে। বিভিন্ন রকম কথা বলে, বিভিন্ন রকম কর্ম করে। আমরা অত্যন্ত সচেতনভাবে এ ভাঙনের বিপক্ষে। আমরা বাংলাদেশের মানুষ এক, আমরা যারা এ ভূখণ্ডে বাস করি আমরা সবাই এক। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, এবং চাকমা, মারমা, উরাং সবাই আমরা একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমাদের প্রতিটি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা যেন লেখাপড়ার সুযোগ পায়, স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ পায়, কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা সেই নেতা দেখতে চাই না যে নেতা আওয়ামী লীগের মতো পালিয়ে যাবে। আমরা সেই নেতা চাই, যে নেতা সবাইকে নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেবে। এ বিষয়গুলো আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে চাই।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের কোনোরকম বিপদের মধ্যে ফেলেছেন, কোনোরকম সমস্যা সৃষ্টি তৈরি করেছেন, আমরা তা দেখতে চাই না—এটা আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই। আমার কাছে অনেক খবর আছে। দয়া করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের কেউ হয়রানি করবেন না।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার ও রমেন বাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/এমকেআর