‘মোদির কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন নেতানিয়াহু’
ভারতের কাছ থেকে ইসরায়েলের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের শীর্ষ প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষজ্ঞ জাকি শালোম। ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড জায়োনিস্ট স্ট্র্যাটেজির এই সিনিয়র ফেলো বলেন, জাতীয় মর্যাদাকে কেবল প্রতীকী বিষয় নয় বরং কীভাবে কৌশলগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেটা মোদির কাছে শিখতে পারেন নেতানিয়াহু।
জাকি বলেন, মার্কিন শুল্কনীতি মোকাবিলা থেকে শুরু করে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃঢ় অবস্থান দেখিয়েছে, জাতীয় সম্মান কোনো বিলাসিতা নয়। বরং তা একটি শক্তিশালী কৌশলগত সম্পদ, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অবস্থান নির্ধারণ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। এতে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে। এর মধ্যেই পাকিস্তান সীমান্ত সংঘাতের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবও প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করে মোদি সরকার।
শালোমের মতে, মোদির কঠোর প্রতিক্রিয়া ছিল মূলত জাতীয় সম্মানবোধের প্রকাশ। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার ফোন করলেও মোদি সাড়া দেননি। তার অবস্থান শুধু অর্থনৈতিক বা সামরিক কারণে নয়, বরং জাতীয় মর্যাদার প্রশ্নে।’
এর বিপরীতে, গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালে বোমা হামলার ঘটনায় ইসরায়েলি সরকারের প্রতিক্রিয়া তিনি কড়া সমালোচনা করেন। ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন নিহত হন। শালোমের দাবি, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সেনাপ্রধান এবং আইডিএফ আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসলে আন্তর্জাতিক মহলের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেছেন। এতে একদিকে উদ্বেগ ও আতঙ্কের বার্তা গেছে, অন্যদিকে পরোক্ষভাবে নিরীহ মানুষের হত্যার দায় স্বীকার করা হয়েছে—যা আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে বিপজ্জনক নজির তৈরি করতে পারে।
তিনি তুলনা টেনে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভূতপূর্ব মৌখিক আক্রমণের মুখে পড়েও মোদি কোনো তাড়াহুড়া করে ক্ষমা চাননি। বরং তিনি দৃঢ় অবস্থান ধরে রেখেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পষ্ট বার্তা গেছে—ভারতকে কখনোই তুচ্ছ বা অধস্তন রাষ্ট্র হিসেবে দেখা যাবে না।’
শালোম মনে করেন, ইসরায়েল অতিরিক্ত স্বচ্ছতা ও প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে স্বল্পমেয়াদে কিছু ক্ষতি ঠেকাতে চাইছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই মনোভাব দেশটির কৌশলগত স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তিনি উপসংহারে লিখেছেন, ‘জটিল পরিস্থিতিতেও জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি। ভারতের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরায়েলকে শিখতে হবে—রাষ্ট্রীয় সম্মান কোনো বিলাসিতা নয়, বরং তা টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য কৌশলগত সম্পদ।’
সূত্র : এনডিটিভি