রাহেল রাজিবের কবিতা: বেদনা ও জীবনবাস্তবতা

4 hours ago 6

রত্না মাহমুদা

কবি ও গবেষক রাহেল রাজিব বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হলেও নিজেকে কবি পরিচয় দিতে আনন্দবোধ করেন। কারণ কবির আলাদা কোনো পরিচয়ের দরকার হয় না। তিনি কবি এটাই তার বড় পরিচয়। তার অসাধারণ কাব্যপ্রতিভার জন্য পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। আজ কবির কিছু উল্লেখযোগ্য কবিতা নিয়ে আলোচনা করবো। প্রথমে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে পনেরো বছর বয়সে ‘অবচেতন মনে আগুনের ছোঁয়া’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে। এটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ‘জুঁইদি ও মাতাল প্রেমিক’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে পাঠকমহলে সমাদৃত হন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘যুদ্ধটা নিজের সাথে। আয়নার সামনে বারবার নিজেকে তৈরি করি। যুদ্ধটা খুব সহজ ও স্বাভাবিক। প্রতিপক্ষ খুঁজে নেওয়ার দায়ভার বহন করে মানুষ কতদূর যেতে পারে? শুধু মনের গহিনে বাড়তে থাকা ক্ষতকে উপেক্ষা করতে ক্লান্ত চারপাশ। ফেলে আসা ও সামনে অপেক্ষমান পথগুলো সর্পিল অনুমেয় আঘাতের ক্ষত।’ (২০১৯:৮) কবির যুদ্ধ নিজের সাথে, আয়নার সামনে নিজেকে আবিষ্কার করে নিজেকেই নিজের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করেন। মনের ব্যথা, রাগ, অভিমান তাকে ক্লান্ত করবে জেনেই এগুলোকে উপেক্ষা করে পথ চলেন।

কবির কর্ম কাব্যরচনা এবং তা সম্ভব হয় যার বলে তার নাম প্রতিভা, স্বজ্ঞা বা কল্পনা। ভামহের মতে কাব্যনির্মিতির পক্ষে প্রতিভাই মুখ্য। মম্মটভট্ট প্রতিভাকে বলেছেন শক্তি, অভিনবগুপ্ত প্রজ্ঞা অ-পূর্ব বস্তু নির্মাণ করতে সক্ষম। এই প্রতিভার বিশেষত্ব হচ্ছে রসাবেশ, স্পষ্টতা সৌন্দর্যময় কাব্যসৃষ্টির ক্ষমতা। (নন্দনতত্ত্ব জিজ্ঞাসা, ১৯৯৪:২১)

‘আগুনে পুড়ে যাচ্ছে কাঁটাতার’ কবিতায় বলেছেন, ‘আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, মনে ও শরীরে। কত অঙ্গার জমা হলে মুসলমান হবো। কত অঙ্গার ক্যামেরায় দেখালে হিন্দু হবো। কত অঙ্গার স্তূপ হলে বৌদ্ধ হবো। কত অঙ্গার অস্বীকার করলে খ্রিষ্টান হবো। কত অঙ্গার কয়লা হলে বাঙালি হবো। (প্রেমের কবিতা, ২০২১:১৫)

উক্ত পঙক্তিসমূহে কবি এক গভীর আত্মজিজ্ঞাসা প্রকাশ করেছেন—মানুষের পরিচয়, ধর্মীয় সত্তা ও জাতিসত্তার ভেতরকার সংঘাতের প্রতীকী রূপে। পঙক্তিগুলো কবিতার আবেগকে স্পষ্ট করে; এখানে আগুন হলো দহন-বেদনা ও আত্মসংগ্রামের প্রতীক।

কবি রাহেল রাজিব ক্রমান্বয়ে ধর্মীয় পরিচয়গুলোকে প্রশ্নের আকারে হাজির করেছেন। তিনি ধর্মের বাহ্যিকতা, সামাজিক ভণ্ডামি ও বিশ্বাসের ভেতরের জটিলতাকে উন্মোচন করেন। এখানে ‘অঙ্গার’ শব্দটি প্রতীক হয়ে উঠেছে মানবিক দহন ও পরিচয়ের মূল্যে-যেন মানুষকে প্রতিটি পরিচয়ের জন্য আগুনে পুড়তে হয়, অঙ্গার হয়ে যেতে হয়। পুরো কবিতার দর্শনকে এক গভীর সামাজিক প্রেক্ষিতে স্থাপন করে। কবি এখানে বাঙালিত্বের প্রশ্নে ফিরে আসেন, যেখানে জাতিসত্তা গঠিত হয় ত্যাগ, সংগ্রাম ও জ্বালাপোড়ার মধ্যদিয়ে। পঙক্তিগুলো যেন ইঙ্গিত করে—বাংলা মাটির পরিচয় অর্জনও কোনো সহজলভ্য উপাধি নয়; এটি দগ্ধ ইতিহাসের ফল। আগুনে পুড়ে যাচ্ছে কাঁটাতার কবিতার প্রতিটি লাইনে প্রশ্নচিহ্ন না থাকলেও একটানা প্রশ্নের আবহ তৈরি হয়েছে, যা পাঠকের চেতনায় অনিশ্চয়তা ও চিন্তার চাপ সৃষ্টি করে। এটি আধুনিক কবিতার বৈশিষ্ট্য—প্রতিবাদী কণ্ঠে আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধান। কবিতাটি ধর্মীয় চেতনা ও জাতিসত্তার ভেতরকার আগুনের প্রতিচ্ছবি; এটি একাধারে দার্শনিক, মানবতাবাদী ও অস্তিত্ববাদী কাব্যচিন্তা-যেখানে কবি প্রশ্ন করেন, মানুষ হওয়া কি কোনো ধর্মীয় চিহ্নের বিষয়, না কি দগ্ধ আত্মার পরিচয়?

‘ঘৃণা’ কবিতায় বলেছেন, ‘ঘৃণা মারাত্মক এক ব্যাধি, সম্পর্কের আয়ুরেখা না মেপে চলা মানুষগুলো সহজেই ঘৃণার বেড়াজালে ঘুরপাক খায়।’ (২৫) এ কবিতায় কবি মানবসম্পর্কের মানসিক ও নৈতিক সংকটকে দার্শনিকভাবে প্রকাশ করেছেন। ঘৃণাকে এখানে একটি মানসিক রোগ হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা জন্ম নেয় অজ্ঞতা, অহংকার ও অসম্পূর্ণ বোঝাপড়া থেকে। যারা সম্পর্কের গভীরতা ও স্থায়িত্ব উপলব্ধি করতে শেখে না, তারা সামান্য আঘাতেই ঘৃণার ফাঁদে পড়ে আত্মবন্দি হয়ে যায়। সংক্ষিপ্ত অথচ চিন্তাশীল পঙক্তিটি মানুষকে সতর্ক করে দেয়—ভালোবাসা ও সহিষ্ণুতাই সম্পর্কের আসল প্রতিষেধক, ঘৃণা নয়।

‘প্রয়োজন’ কবিতায় বলেছেন, ‘প্রয়োজন শব্দটা মারাত্মক! সম্পর্কের আয়ুরেখা এই প্রয়োজন-এর উপর নির্ভর করে বলে অধিকাংশের বিশ্বাস! আমি তো মফিজ! তাই প্রয়োজনকে কখনো প্রয়োজন মনে করিনি!!’ (২৬) কথাগুলোয় একটা তীব্র সত্য লুকিয়ে আছে। আজকের যুগে বেশিরভাগ সম্পর্কই টিকে থাকে প্রয়োজনের ওপর—যতক্ষণ দরকার, ততক্ষণ পাশে থাকা। তাই কবি প্রয়োজন-শব্দটাকেই ভয়ংকর বলে মনে করেছেন। কবি মানুষে মানুষে সম্পর্কের সেই সত্যটা মনে করিয়ে দেন—সব সম্পর্কের ভিত স্বার্থে নয়, কিছু সম্পর্ক টিকে থাকে হৃদয়ের সততায়। তাই কবির এই বক্তব্য আসলে একধরনের মানবিক প্রতিবাদ—যেখানে প্রয়োজন নয়, ভালোবাসাই শেষ কথা। এ গদ্যকবিতায় কবি একদিকে সামাজিক সম্পর্কের স্বার্থনির্ভর কাঠামোকে প্রশ্ন করেছেন, অন্যদিকে নিজের সরল মানসিকতার গর্বও ব্যক্ত করেছেন। এটি একাধারে ব্যঙ্গ, বোধ ও মানবিক সততার মিশ্রণ—যা আধুনিক কাব্যচেতনার দারুণ উদাহরণ।

‘অভিজ্ঞান’ কবিতায় তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো চোখের জলেরও স্রোত থাকে, সাঁতার জানাটা জরুরি।’ (প্রেমের কবিতা, ২০২১:২৮) কবি এক নিঃশব্দ জীবনবোধের কথা বলেন। চোখের জল সাধারণত দুঃখ, কষ্ট বা ভাঙনের প্রতীক কিন্তু কবি এখানে সেই জলকে স্রোত হিসেবে দেখেছেন—অর্থাৎ এমন এক প্রবাহ, যা মানুষকে ভাসিয়ে নিতে পারে। জীবনের দুঃখ-ব্যথার ঢেউ থেকে কেউ বাঁচতে পারে না, তাই সাঁতার জানা মানে হলো সেই কষ্টকে সামলে টিকে থাকার ক্ষমতা অর্জন করা। এই এক লাইনে কবি জীবনের প্রতি সহনশীলতা, মানসিক শক্তি আর স্থিতধী মনোভাবের এক সুন্দর উপদেশ দিয়েছেন—চোখের জল থামানো নয়, তার স্রোতে ভেসে না গিয়ে সাঁতার কেটে পার হওয়াই জীবনের আসল শিক্ষা।

আরও পড়ুন
গাভী বিত্তান্ত: প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়ের মনস্তাত্ত্বিক দলিল
দেশে বিদেশে: মানুষ যেখানে মানচিত্রের চেয়ে বড়

‘অপচয় নয় একটিও ফোঁটা/ মেপে মেপে গড়াক, বাড়-বাড়ন্ত এই ভালোবাসা।’ (প্রেমের কবিতা ২০২১:২৮) পঙক্তিতে ভালোবাসাকে কবি একধরনের অমিত কিন্তু সচেতন প্রবাহ হিসেবে কল্পনা করেছেন। ভালোবাসা যেন বন্যা নয় বরং নিয়ন্ত্রিত নদী। নিজের গতিতে, নিজের ছন্দে, ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা এক অনুভূতি। মেপে মেপে গড়াক—কথাটায় আছে প্রাপ্তবয়স্ক প্রেমের পরিণত জ্ঞান যেখানে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে আছে দায়িত্ব, আর বাড়-বাড়ন্ত শব্দে প্রকাশ পায় সেই প্রেমের ক্রমবিকাশ, তার প্রসার। এ কয়েকটি লাইনে কবি শিখিয়ে দিয়েছেন সত্যিকারের ভালোবাসা আবেগের অপচয়ে নয় বরং যত্নের মাপে বেড়ে ওঠে।

‘সাহিত্যের শেষ মূল্য আনন্দ। সুন্দর আনন্দ দেয় তাই সাহিত্যে সুন্দরকে নিয়ে কারবার। বস্তুত বলা চাই, যা আনন্দ দেয় তাকেই মন সুন্দর বলে, আর সেটাই সাহিত্যের সামগ্রী।’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যতত্ত্ব, সাহিত্যের পথে, ভূমিকা)। তেমনি কবি রাহেল রাজিবের আনন্দ কবিতায়। কবির কোনো দায়ভার থাকতে নেই। কবির যত আনন্দ, যত সখ্য তার কবিতায়। জীবনের সব কথাই কবিতার আহ্বানে মিলিয়ে যাক, শেষ হোক কথার ভেতরেই। কবির সৃষ্টিশীল দায়বোধ, আত্মনিবেদন ও কবিতার প্রতি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ প্রকাশ করে। এটি এমন এক অবস্থান, যেখানে কবি মানুষ থেকে পৃথক হয়ে যায় না বরং মানুষ হয়ে কবিতারই অংশ হয়ে ওঠে।

‘দায়ভার নিয়েই জীবন চলে-কিন্তু কবির কোনো দায় নেই-আর যদি কোনো দায় থাকেই তবে সেটা কবিতার দায়। কবিতার গহিনে-অলিন্দে যে বসবাস তাকে উপেক্ষা করার দুঃসাহস আমার নাই। শুধু কথা হবে-কথায় কথায় যে টান, কবিতার উদ্বাহু আহ্বানেই হোক এই কবিতাভাসান।’ (প্রেমের কবিতা ২০২১:২৮) এখানে কবি যেন ঘোষণা দেন, জীবনের দায় আর কবিতার দায় এক নয়। জীবনের নিয়ম, সমাজের প্রত্যাশা, নৈতিকতার ভার—এসব থেকে কবি মুক্ত, কারণ তার একমাত্র দায়বদ্ধতা কবিতার প্রতি। কবি নিজের অবস্থানকে প্রকাশ করেছেন এক অন্তর্জাগতিক আশ্রয়স্থল হিসেবে, যেখানে তিনি বাস করেন শব্দ, ছন্দ ও অনুভবের ভেতর। কথায় কথায় যে টান, কবিতার উদ্বাহু আহ্বানেই হোক এই কবিতাভাসান।

‘জুঁই জীবনের দায় কবিতায়,/ দিল্লি জয়পুর আগ্রার ইতিহাস/ যোগসূত্র খুঁজে নাও সমান্তরালে!/ শুধু জেনো/ জুঁই, পরশ্রীকাতররা সবসময় নিন্দুক হয়।’ (জুঁই: জীবনের দায় ২০২১:১২৯) এখানে কবি একদিকে ব্যক্তিগত ও সামাজিক বাস্তবতার মিল দেখাতে চাইছেন। জুঁই জীবনের দায় বলতে বোঝানো হচ্ছে, জীবনের সরলতা, নরমতা এবং দায়বোধ—যেটা আমাদের প্রতিদিনের সংস্পর্শে থাকে। আবার দিল্লি জয়পুর আগ্রার ইতিহাস দিয়ে দীর্ঘ, জটিল ইতিহাসের ছাপ আনা হয়েছে, যা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে সমান্তরাল করতে চাওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত সরল অথচ তীক্ষ্ণ মন্তব্য। এটি মানুষের সমাজবোধ এবং স্বভাবের বাস্তবতা তুলে ধরে; যারা নিজের অভিজ্ঞতা বা দায় বোঝে না, তারা সহজেই নিন্দায় নামতে প্রস্তুত থাকে। কবি এখানে ব্যক্তিগত জীবন, ইতিহাস এবং সামাজিক বাস্তবতার সংযোগ খুঁজে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। সমালোচনার মুখোমুখি হতে হলে ধৈর্য ও জ্ঞান অপরিহার্য।

‘সচেতন উপস্থিতি-চারপাশে কিশোর অতীত। এখন সূচের ডগায় আমি, জুঁই, কথায় কথায় পথ চলা হলো বহুদূর। শুধু হেঁটে চলা-নিরন্তর। যদি উল্টো পথে হাঁটো এসো চোরাপথে; সম্পর্কের জেরে সবকিছু ধুয়ে মুছে নামি কানাহারে।’ (প্রেমের কবিতা, ২০২১:১৩১) ‘জুঁই সম্পর্কের আয়ুরেখা’ কবিতায় তিনি সম্পর্কের সময়চিত্রে আত্মবিশ্লেষণী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। কবিতাটি আধুনিক বাংলা কবিতার ভেতর সম্পর্ক, সময় ও স্মৃতির এক মৃদু প্রতিফলন। এখানে কবি আমি ও জুঁই-এর সম্পর্ককে কেবল প্রেম বা বন্ধন হিসেবে দেখেননি; তা হয়ে উঠেছে এক ধরনের আত্মচেতনার আয়না। ‘কিশোর অতীত’-এখানে শুধু বয়স নয় সেই অতীতের মধ্যে আজকের সচেতন উপস্থিতি-কবি নিজের অবস্থান খুঁজে বেড়ায়। কবিতাটি স্মৃতি ও বর্তমানের দ্বন্দ্বে গঠিত এক অনুভূতির আয়ুরেখা, যেখানে প্রেম, বেদনা, পুনরাগমন ও সময়চেতনা মিলেমিশে এক হয়ে যায়।

কবির ভাষা সংযত, রূপকপ্রবণ এবং স্বল্পবাক; মিতভাষিতায়ই কবিতাকে দিয়েছে গভীরতা ও সৌন্দর্য। ক্যাম্পাস জগন্নাথ কবিতায় তিনি বলেন, ‘মন তুই পরে থাক/ খুঁজে যাক খুঁজে দ্যাখ/ ফেলে আসা ভিক্টোরিয়া পার্ক/ কিংবা প্রিয় জগন্নাথ!’ (কফিসূত্রে, ২০২২: ৩১) এখানে কবি এক ধরনের স্মৃতিচারণ ও নস্টালজিয়ার অনুভূতি ফুটিয়ে তুলেছেন। তার কথায় স্পষ্ট যে, স্মৃতি এখনও জীবন্ত, হৃদয়ে গেঁথে আছে। কবি পাঠককে আহ্বান জানাচ্ছেন অতীতের জায়গা, যেমন ভিক্টোরিয়া পার্ক বা জগন্নাথ ক্যাম্পাস, নিজে খুঁজে দেখার জন্য-যেখানে প্রেম, বন্ধু, শিক্ষার মুহূর্ত সবই জমে আছে। যেখানে কবির থিতু।

‘বংশানুক্রমে মানুষ যে জ্ঞান আহরণ করছে, যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে সে তো একটি কালের জন্য শুধু নয়, মানুষ তাকে দিয়ে যেতে চায় পরবর্তী প্রজন্মের হাতে। মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়। এই অভিজ্ঞতার একটি আধার হল ভাষা। যখন মানুষ লিখতে শেখেনি, তখনও ভাষার মধ্য দিয়েই এই অভিজ্ঞতাকে দিয়ে গেছে অন্য প্রজন্মের হাতে।’ (শিশির কুমার দাশ, ২০২১:১৯) কবির আত্মসচেতনতা, মননের বৈচিত্র্য, নৈর্ব্যক্তিকতার আদর্শ এবং ঐতিহ্যের দিকে মনোযোগ ছাড়াও জুঁইয়ের প্রেম, সাম্প্রদায়িকতার আঘাত, বাস্তবতার জীবনকথন ও আত্মকথনের ডায়েরিতে যুক্ত করেছে নবকাল। যে কাল ও সময়কে নতুন করে ভাবতে শেখায়!

বাংলাদেশের গদ্যকবিতার ধারায় একবিংশ শতাব্দীর প্রেম, দ্রোহ, ভালোবাসার কষাঘাত, পরিবার স্বজনদের প্রকৃত চেহারা, মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মানুষের পাশবিকতা, জীবনবাস্তবতার প্রাত্যহিক মুহূর্তকে তার কাব্যকথায় ফুটিয়ে তুলেছেন! আজ ২৩ অক্টোবর কবির জন্মদিন। জন্মদিনে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। তার কবিতার নিমগ্ন পাঠক হিসেবে আমার পাঠ-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।

এসইউ/জেআইএম

Read Entire Article