শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে আইন শক্তিশালীকরণ জরুরি

16 hours ago 4
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে বাংলাদেশ সম্প্রতি কিছুটা সাফল্য অর্জন করলেও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অগ্রগতির তুলনায় এখনো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।  সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন : অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের কর্মশালায় এ কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ার ২৬ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের হার যথাক্রমে ৫০ শতাংশ এবং ৪৭ শতাংশ। অথচ বৈশ্বিক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের গড় হার ৭৭ শতাংশ এবং ৭৪ শতাংশ। বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ সংশোধন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব প্রদান করা হলে এই লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে বলে মতামত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ। এটি একইসাথে, এসডিজি’র ১৬.৯ লক্ষ্যমাত্রা-জন্ম নিবন্ধনসহ সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র প্রদান অর্জনেও সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করেছেন তারা। কর্মশালায় জানানো হয়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য প্রদানের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পরিবারকে দেওয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জন্ম নিবন্ধনের দায়িত্ব প্রদান করা হলে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় জন্মগ্রহণ করা দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু নিশ্চিতভাবে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বহু দেশ হাসপাতালভিত্তিক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে শতভাগ বা তার কাছাকাছি নিবন্ধন হার অর্জন করেছে। কর্মশালায় বক্তারা আইন শক্তিশালীকরণ এবং বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, নিবন্ধনের বিষয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব, জনবল সংকট, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে দুর্বল সমন্বয় আইন বাস্তবায়নের পথে বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে দ্রুত আইন সংশোধন করে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসমূহকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্ব আইনগতভাবে প্রদান করতে হবে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাগরিকত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সম্পত্তির উত্তরাধিকার ও ভোটাধিকারের মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাজেট প্রণয়ন, জনস্বাস্থ্য এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কর্মশালায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্সের (আত্মা) কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। কর্মশালার মুক্ত আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন চ্যানেল আইয়ের চিফ নিউজ এডিটর মীর মাসরুর জামান এবং বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার এবং কোঅর্ডিনেটর মাশিয়াত আবেদিন।  
Read Entire Article